নতুন বাংলাদেশ। হাসিনার সরকারের পতন হয়েছে। সেই জায়গায় এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তারই প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। এদিকে সামনেই দুর্গাপুজো। একটা প্রশ্ন বার বার করেই উঠছে এবার কি বাংলাদেশের সংখ্য়ালঘু হিন্দুরা দুর্গাপুজো যথাযথভাবে পালন করতে পারবেন?
ইতিমধ্যে সংখ্য়ালঘু হিন্দু সহ অন্যান্যদের সুরক্ষার উপর বিশেষভাবে নজর দেওয়ার কথা বলেছিলেন ইউনুস। তিনি বলেছিলেন তিনি এমন একটা বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চান যেখানে সবাই নির্ভয়ে তাঁদের ধর্ম পালন করতে পারবেন। সেখানে কোনও মন্দির পাহারা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। এক নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন তিনি। সেই সঙ্গেই ঢাকেশ্বরী মন্দিরেও গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে গিয়ে তিনি সংখ্য়ালঘু হিন্দুদের নানাভাবে আশ্বাস দিয়েছিলেন।
কিন্তু সামনেই তো দুর্গাপুজো। বাস্তবে কি এবারের দুর্গাপুজো যথাযথভাবে পালন করা সম্ভব হবে? সেই প্রশ্নের উত্তরও নানা মহলে ঘুরছে। তবে এবার বাংলাদেশের ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আফম খালিদ হাসান এনিয়ে বার্তা দিয়েছেন। ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া একটা সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তন হলেও জন্মাষ্টমীর মতোই দুর্গাপুজোর সময়ও সংখ্য়ালঘুদের রক্ষা করার অঙ্গীকার করা হচ্ছে। পুজোর সময় হিন্দুদের নিরাপত্তা দেওয়া হবে ও প্রয়োজনীয় সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
সেই সঙ্গেই খালিদ হাসান জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। ধর্মান্ধ নয়। বাংলাদেশের সংবিধান বৈষম্য ছাড়াই সমস্ত ধর্মীয় বিশ্বাসের নাগরিকদের সমান অধিকার প্রদান করে। বাংলাদেশের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রকে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রীষ্টানদের জন্য কল্যাণকর ট্রাস্ট রয়েছে। আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে সকলের সঙ্গে নিবিড় সমণ্বয় রেখে কাজ করছি। জানিয়েছেন বাংলাদেশের ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা।
তবে এসবের মধ্য়েই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিগত শেখ হাসিনার শাসন কালে দেশের বৃহত্তম ইসলামী দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও এর ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দল ও এর সব সহযোগী সংগঠনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সন্ত্রাস ও হিংসামূলক কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ না পাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এতে আরো বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার বিশ্বাস করে যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো ‘কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে’ জড়িত নয়।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর চার দিন আগে গত ১ অগস্ট তার সরকার এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে দল ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। সে সময় শেখ হাসিনার সরকার জামায়াতের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে হিংসা বিক্ষোভে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছিল।