সন্দীপ ঘোষকে কি আড়াল করার চেষ্টা করছিল সরকার? এই প্রশ্নটা ঘুরছে বিভিন্ন মহলে। তবে সূত্রের খবর, গত মার্চ মাসে সন্দীপের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিতে চায়নি টালা থানা। এরপর কোর্টে অভিযোগ জমা পড়ে। ৫ মাস আগে সন্দীপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ জমা পড়েছিল। এরপর তদন্তও শুরু হয়েছিল। কিন্তু সেই তদন্তে গত এপ্রিল মাসে সন্দীপ ঘোষকে ক্লিনচিট দিয়েছিল টালা থানা।
আর সেই সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে একাধিক বিস্ফোরক তথ্য পেয়েছে সিবিআই। এরপর সিবিআই গ্রেফতার করে সন্দীপ ঘোষকে। নিজাম প্য়ালেস থেকে কোর্ট চত্বর সর্বত্র সন্দীপ ঘোষকে দেখে উঠল চোর চোর স্লোগান।
এদিকে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে টালা থানায় দুর্নীতির অভিযোগও দায়ের করা হয়েছিল।
কিন্তু সব মিলিয়ে সন্দীপকে কিন্তু আরজি কর কাণ্ডের পরেও ন্যাশানাল মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পদ দেওয়া হয়েছিল। যে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি অভিযোগ সেই সন্দীপ ঘোষকে পদ দেওয়ার জন্য কেন মরিয়া ছিল রাজ্য সরকার? তবে এবার সিবিআই গ্রেফতার করার পরে আবার সন্দীপ ঘোষকে সাসপেন্ড করল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
গোটা আরজি করকে কার্যত নিয়ন্ত্রণ করত সন্দীপ ঘোষ। তার দাপটই ছিল আলাদা। একটা নির্দিষ্ট কোর টিম নিয়ে কাজ করত সন্দীপ। এর আগেই তৎকালীন ডেপুটি সুপার আখতার আলিও এই ধরনের অভিযোগ করেছিলেন। সন্দীপের পাহারায় থাকত বাউন্সাররা।
একেবারে ভয়াবহ অভিযোগ। মূলত বেওয়ারিশ মৃতদেহ থেকে দেহাংশ কেটে নেওয়ার একটা চক্র কাজ করত। আখতার আলি নিজেও এই বেওয়ারিশ লাশ নিয়ে অবৈধ ব্যবসার অভিযোগের কথা উল্লেখ করেছিলেন।
ঠিক কী ধরনের অভিযোগ?
সরাসরি হয়তো প্রমাণ করাটা অত্যন্ত কষ্টের। তবে যে সমস্ত দাবিদারহীন দেহ আসত সেখান থেকে দেহাংশ কেটে বিক্রি করার একটা চক্র কাজ করত। সেগুলি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হত। এর পেছনে মোটা টাকার লেনদেন করা হত। একেবারে ভয়াবহ অভিযোগ। সব মিলিয়ে আরও প্যাঁচে পড়ছেন সন্দীপ ঘোষ।
সেই সঙ্গেই ডেড বডি নিয়েও একেবারে প্যাকেজ তৈরি করা থাকত বলে অভিযোগ। কার্যত মর্গেও টাকার একটা বড় বেআইনি লেনদেন করা হত। প্রতিটি দেহ ছাড়ার বিনিময়ে পরিজনদের কাছ থেকে মোটা টাকা দাবি করা হত। আর সেই টাকা হাত ঘুরে যেত ওপরতলায়। অভিযোগ।
পরিজনদের আর্থিক অবস্থার উপর নির্ভর করে টাকার দাবি করা হত। একেবারে প্যাকেজ সিস্টেমে টাকা নেওয়া হত। তার সঙ্গে কাচের গাড়ির ব্যবস্থাও থাকত।
ক্রমেই আরজি করের ভেতরের দগদগে ক্ষতর বিষয়টি সামনে আসতে শুরু করেছে। বছরের পর বছর ধরে একাংশ চিকিৎসক এনিয়ে সরব হয়েছেন। আবার অপর অংশ গা বাঁচিয়ে চাকরির দিনগুলো কাটিয়ে দিয়েছেন। আর যে অংশের চিকিৎসকরা সন্দীপ ঘোষের কথা মতো কাজ করেছেন তাঁদের জন্য বরাদ্দ হয়েছে নানা ধরনের সুবিধা। সব মিলিয়ে হাসপাতালের অন্দরে একের পর এক অনিয়মের অভিযোগ ক্রমেই সামনে আসছে।