‘‌আমার বাংলায় সুরক্ষিত প্রতিটা স্লোগান, রাত জাগা’‌, বিজেপিকে নিশানা করে পোস্ট দেবাংশুর

আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করার ঘটনায় তোলপাড় রাজ্যের রাজপথগুলি। প্রতিবাদ–আন্দোলন–ধরনা–স্লোগান থেকে উই ওয়ান্ট জাস্টিসের দাবি। এই সবই দেখছে বাংলার মানুষ। রাতের কলকাতায় মিছিল, নারীদের রাত জাগা হলেও তা রুখতে সরকার পুলিশকে লেলিয়ে দেয়নি। বরং চিকিৎসকদের এবং নাগরিক সমাজের এই আন্দোলনকে সমর্থন করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর প্রধান বিরোধী দল বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফার দাবি তুলেছে। এই বিষয়টি নিয়েই এবার বাংলা এবং উত্তরপ্রদেশের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের আইটি সেলের ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্য।

এবার এই প্রতিবাদ–আন্দোলনকে সমর্থন করে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে বিজেপিকে জোর আক্রমণ করেছেন দেবাংশু। আর নেটপাড়ায় দেবাংশুকে অনেকেই সমর্থন করেছেন। কারণ দেবাংশু এই আন্দোলনের বিরুদ্ধে লেখেননি। শুধু তফাৎটা তুলে ধরেছেন অন্য রাজ্যের সঙ্গে। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে দেবাংশু লিখেছেন, ‘‌এ আন্দোলন বাংলা দেখেনি আগে। এ আন্দোলন দেখেনি ভারতবর্ষ। খোলা গলায় স্লোগান উঠছে। মোড়ে মোড়ে জমা ভিড় থেকে মুহুর্মুহু শোনা যাচ্ছে জাস্টিসের দাবি। রাজ্য রাত জাগছে। শহর প্রহর গুনছে। মোমবাতি আর মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইটে উজ্বল হয়ে উঠছে কৌশিকী অমাবস্যার কালো রাত্রিও। তোমরা সবাই যখন ওই আলোর দিকে তাকিয়ে আছো, আমি তাকিয়ে আছি বিপরীতে.. একটু অন্য দৃষ্টিকোণে..। আমার বাংলায় প্রতিবাদের অধিকার সুরক্ষিত। আমার বাংলায় সুরক্ষিত প্রতিটা স্লোগান, প্রতিটা রাত জাগা।’‌

ইতিমধ্যেই আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। আজ, বুধবারও রাত জাগবে মানুষ থেকে চিকিৎসকরা। কারণ আগামীকাল, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে রয়েছে আরজি কর মামলার শুনানি। এই আবহে দেবাংশু এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘‌আচ্ছা, গোবলয়ের কোনো রাজ্য কখনও এ প্রতিবাদের সাক্ষী হয়েছে? ঘটনা তো কম ঘটেনি! বরং এক একটা ঘটনার ভয়াবহতা হার মানাবে মধ্যযুগের বর্বরতাকেও.. যেমন ধরুন ধর্ষিতাকে খুন করে মেরে ফেলার পর আইনের দ্বারস্থ হওয়া তার মা, মাসি এমনকি উকিলকেও খুন করা? বা ধরুন, ধর্ষণ করে মেরুদণ্ড ভেঙে, সাক্ষী রুখতে জিভ কেটে হত্যা করা এবং তারপর সর্বহারা মা, বাবা, ভাইকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখে পুলিশ দিয়ে সেই বোনের দেহ পেট্রোল ঢেলে জ্বালিয়ে দেওয়া? এরকম একটা, দুটো নয়.. শয় শয় ঘটনা দেখেছে দেশ। এই দশকেই। এই বছর খানেক আগেও।’‌

আরও পড়ুন:‌ রাজ্য সরকারের হেল্থ স্কিমে এবার এল বড় খুশির খবর, মানসিক রোগের চিকিৎসার খরচ মিলবে

গতকাল বিধানসভায় ধর্ষণ বিরোধী কঠোর আইনের বিল এনেছে রাজ্য সরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিবিআইয়ের কাছে বিচারের দাবি করেছেন। কারণ আরজি কর হাসপাতালে যে ঘটনা ঘটেছে তাতে দোষীদের ফাঁসি হোক চান তিনি। বিল পাঠ করার সময় সেটা বলেছেন। এবার দেবাংশু বাংলা আর উত্তরপ্রদেশের মধ্যে পার্থক্য সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেছেন। তিনি লেখেন, ‘‌কিন্তু, সেই অন্ধকার রাত গুলো দখল করতে পারেনি নারী শক্তি। সেই অন্ধকার রাতে জ্বলে উঠতে দেওয়া হয়নি হাজার হাজার মোমবাতিকে। স্লোগানের টুটি চেপে ধরা দেখে ভয়ে আর আওয়াজ তোলেননি কেউ। বুলডোজারের ভয়ে তাই মোড়ে মোড়ে জমায়েত হয়নি, লক্ষ্ণৌ থেকে এলাহাবাদের রাজপথ জুড়ে মিলিয়ে যায়নি শত শত মিছিল.. কারণ? ভয়! শাসকের ভয়। আমার কলকাতা জানে, হাজার প্রতিবাদ মিছিল রাতের পর রাত দখল করলেও তিলক কাটা গুন্ডারা লাঠি নিয়ে তেড়ে আসবে না। রাজপথের মোড়ের জমায়েত তুলতে পুলিশ লাঠি চালাবে না। কারণ, আমার রাজ্যের নাম পশ্চিমবঙ্গ; উত্তরপ্রদেশ নয়।’‌