Bangladesh Border: সীমান্তের জিরো লাইনে ‘বাংলাদেশি’ কিশোরীর গুলিবিদ্ধ দেহ, শোরগোল বাংলাদেশে

 আরিফুল ইসলাম মিঠু

ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে বাংলাদেশি কিশোরীর মৃত্যুকে নিয়ে বিতর্ক নতুন মোড় নেয় যখন ঢাকা এই ঘটনার জন্য ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে (বিএসএফ) দায়ী করার চেষ্টা করে।

সোমবার সকালে ত্রিপুরার বিএসএফ জওয়ানরা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতারের সামনের জিরো লাইনে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই কিশোরীর দেহ উদ্ধার করে। অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের চেষ্টাকালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ভারতীয় কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশি পক্ষ দেহ ফেরত নিতে অস্বীকৃতি জানানোর ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেহ বিজিবির কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং দুই বাহিনীর মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়।

বৃহস্পতিবার ঢাকায় ভারতীয় মিশনে পাঠানো এক প্রতিবাদলিপিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করে, মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার ১৩ বছর বয়সী স্বর্ণ দাস ১ সেপ্টেম্বর বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছে।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, দাস ও তার মা মানব পাচারকারীদের সহায়তায় অবৈধ পথ দিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করেন। তারা ভারতে দাসের ভাইয়ের সাথে দেখা করতে চেয়েছিলেন।

ভারতের পক্ষ থেকে এই প্রতিবাদের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

বাংলাদেশ বলেছে, এ ধরনের ঘটনা ‘অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনাকাঙ্ক্ষিত’ এবং ১৯৭৫ সালের সীমান্ত কর্তৃপক্ষের জন্য ভারত-বাংলাদেশ গাইডলাইনের বিধানের লঙ্ঘন।

তবে এর আগে ভারতীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশের চেষ্টাকালে ওই কিশোরকে গুলি করা হয়ে থাকতে পারে বলে তারা সন্দেহ করছেন।

বিষয়টি সম্পর্কে অবগত বিএসএফের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রথমে বিজিবি দেহ ফেরত নিতে রাজি হয়নি। তারা বলেছে যে তিনি বাংলাদেশের নন এবং সম্ভবত ভারতের বাহিনী তাকে হত্যা করেছে। তবে আমাদের তদন্তে জানা গেছে তিনি বাংলাদেশের কালাউড়া থানা এলাকার বাসিন্দা।

তিনি আরও বলেন, ‘খুব সম্ভবত, তিনি গুলিবিদ্ধ হন এবং শূন্য লাইনে পড়ে যাওয়ার আগে কয়েক মিটার দৌড়তে সক্ষম হন।

ভারতীয় অংশে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া থাকলেও বাংলাদেশে কোনো বেড়া নেই। ৫ অগস্ট, যেদিন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান এবং বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়, সেদিন থেকে হাজার হাজার বাংলাদেশি নাগরিক, যাদের মধ্যে অনেকেই হিন্দু বলে দাবি করা হচ্ছে, নিপীড়নের ভয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করেছে। এ ধরনের অনুপ্রবেশকারীদের সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া বা জিরো লাইনে থামিয়ে বিএসএফ তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়েছে।

মেয়েটির দেহ উদ্ধারের একদিন আগে বিজিবি সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমকারীদের সম্পর্কে তথ্য দেওয়ার জন্য দুটি হেল্পলাইনের ঘোষণা দেয়।

বিএসএফের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, সীমান্তে প্রাণঘাতী নয় এমন নীতি অনুসরণ করে তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই  কর্মকর্তা বলেন, বিজিবির গুলিতে মেয়েটি নিহত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘৫ অগস্টের পর থেকে এত অনুপ্রবেশের চেষ্টার ঘটনা সত্ত্বেও বিএসএফ কোনও ক্ষেত্রেই বল প্রয়োগ করেনি। আসলে সব অনুপ্রবেশকারীকে আটক করে পতাকা বৈঠক করে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।

বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্টে পতাকা বৈঠকের পর দুই ডজনের বেশি মানুষকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।