‘আশায় ছিলাম ছেলেকে জীবিত পাওয়ার, পেলাম লাশ’

চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে ঝরনায় ঘুরতে এসে সিফাতুর রহমান মজুমদার (২১) নামে নিখোঁজ এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খৈয়াছড়া ইউনিয়নের ঝরনা এলাকায় নিখোঁজের ৪২ ঘণ্টা পর তার লাশ উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

সিফাতুর রহমান ঢাকার মিরপুর-১ এলাকার মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে। ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভের (ইউডা) চারুকলা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত মঙ্গলবার বন্ধুদের সঙ্গে খৈয়াছড়া ঝরনায় ঘুরতে এসে বিকালের দিকে নিখোঁজ হন।

সিফাতুর রহমানের সঙ্গে ঘুরতে আসা বন্ধু মেহেদি হাসান বলেন, ‘আমরা ঢাকা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ জন মিলে মঙ্গলবার সকালে খৈয়াছড়া ঝরনায় ঘুরতে আসি। সারা দিন ঘুরে বিকালে ফেরার পথে সিফাতকে সঙ্গে আসতে না দেখে আশপাশে খুঁজতে থাকি। কোথাও না পেয়ে সন্ধ্যায় মীরসরাই থানায় জিডি করি।’ 

তিনি জানান, বুধবার সকাল থেকে স্থানীয় লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা মিলে দিনভর খুঁজেও তাকে পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার দুপুরে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল তল্লাশি করে ঝরনা এলাকার একটি কূপ থেকে ভাসমান অবস্থায় সিফাতের লাশ উদ্ধার করে।

ছেলের সন্ধানে বুধবার সকাল থেকে খৈয়াছড়া ঝরনা এলাকায় অবস্থান করছেন সিফাতুর রহমানের মা বিউটি রহমান। তিনি বলেন, ‘আশায় ছিলাম, ছেলেকে জীবিত পাওয়ার। আজ দুপুরে ছেলের লাশ পেলাম। ঝরনার কূপে আমার স্বপ্নের সমাধি হয়ে গেছে।’

সিফাতুরের ভাই রিফাতুর রহমান মজুমদার ও মামাতো ভাই সোহাগ হাওলাদার জানান, সিফাতুরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হতে পারে। তাই ঘটনাটি তদন্তের দাবি জানান তারা। 

মীরসরাই ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের অফিসার ইমাম হোসেন পাটোয়ারী বলেন, বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঝরনা এলাকায় খুঁজেও সিফাতুরের সন্ধান মেলেনি। আজ সকাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল তল্লাশি শুরু করে। দুপুরের দিকে ভাসমান লাশ উদ্ধার করা হয়।

মীরসরাই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দ্বীপ্তেশ রায় বলেন, ‘মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মরদেহ ফুলে গেছে। মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। আপাতত এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।’