আজারবাইজানের পক্ষ নেওয়ায় রাশিয়াকে ইরানের হুঁশিয়ারি

ইরানের নতুন সংস্কারপন্থি সরকার আজারবাইজানের পক্ষে রাশিয়ার অবস্থান নেওয়ার ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। আর্মেনিয়া-ইরান সীমান্তে একটি করিডোর নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে তেহরান এই হুঁশিয়ারি দিলো। এই করিডোর ইরানের ইউরোপের সঙ্গে সংযোগ সীমিত করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়েদ আব্বাস আরাঘচি এক টুইট বার্তায় বলেছেন, আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার মূল ভিত্তি। আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি যেকোনও হুমকি বা সীমানা পরিবর্তন ইরানের জন্য সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।

এই বক্তব্য রাশিয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে দেওয়া হয়েছে। মস্কো আজারবাইজানকে আর্মেনিয়া-ইরান সীমান্ত দিয়ে একটি করিডোর খোলার আহ্বান জানিয়েছে, যা ইরানের জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ইরান গত সপ্তাহে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সেই ডেডভকে তলব করে তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করে এবং সীমান্তে সংঘাতের আশঙ্কা নিয়ে উদ্বেগ জানায়।

আরাঘচির মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের অন্য শীর্ষ কর্মকর্তারাও প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। ইরানের প্রভাবশালী নেতা মোহসেন রেজায়ি রাশিয়ার কর্মকাণ্ডকে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের বিরোধী’ বলে উল্লেখ করেছেন।

ইরান ঐতিহাসিকভাবে আজারবাইজান ও তুরস্কের জাঙ্গেজুর করিডোর স্থাপনের প্রচেষ্টার বিরোধিতা করে আসছে, যা ইরানের ইউরোপের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে পারে। আজারবাইজান বহুবার বলেছে, প্রয়োজনে তারা জোরপূর্বক এই করিডোর স্থাপন করতে পারে, যা আর্মেনিয়ার সঙ্গে আরেকটি সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি করবে।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের আজারবাইজান সফরের সময় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এই করিডোর নিয়ে দেওয়া মন্তব্য তেহরানে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।

তেহরানে বর্তমানে রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখা নিয়ে বিতর্ক চলছে। আরাঘচির কড়া মন্তব্য নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের ভারসাম্যপূর্ণ পূর্ব-পশ্চিম নীতি বাস্তবায়নের প্রতিফলন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মুখপাত্র পিটার স্টানো সতর্ক করেছেন, যদি ইরান রাশিয়াকে আরও সামরিক সহায়তা দেয়, বিশেষ করে ইউক্রেনে রাশিয়ার কর্মকাণ্ডের জন্য, তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাবে।