Bangladesh hindu murder: নবির সম্পর্কে ‘আপত্তিকর মন্তব্য’, বাংলাদেশে থানায় ঢুকে হিন্দু কিশোরকে পিটিয়ে খুন

বাংলাদেশে এখনও হিন্দুদের উপর অত্যাচার অব্যাহত রয়েছে। এবার থানার ভিতরে ঢুকে কার্যত পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে এক হিন্দু কিশোরকে পিটিয়ে এবং কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নবি হযরত মহম্মদ সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করার জন্য ওই কিশোরকে খুন করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। নিহত কিশোরের নাম উৎসব মণ্ডল (১৫)। সে একজন কলেজ পড়ুয়া। বাংলাদেশের খুলনা শহরে ইসলামপন্থীরা তাকে হত্যা করে বলে অভিযোগ। এমন ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছে হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনরিটিস।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশে হিন্দুরা লড়ছেন, ভারতে আসার চেষ্টা করছেন না, দাবি অসমের মুখ্য়মন্ত্রীর

জানা গিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় নবির সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করার পরে স্থানীয় মাদ্রাসার ছাত্রদের একটি দল উৎসবকে ধরে থানায় নিয়ে যায়। এরপর তার কঠোর শাস্তির দাবিতে মাদ্রসার ছাত্র এবং ইমাম সমিতির সদস্যরা থানার বাইরে জমায়েত শুরু করলে উত্তেজনা বেড়ে যায়। তারা ওই কিশোরের মৃত্যুদণ্ডের দাবি করে। জেলাশাসক তাদের আশ্বস্ত করেন যে নির্দিষ্ট আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে। তাতে সন্তুষ্ট হয়নি উত্তেজিত জনতা। পরে প্রায় কয়েক হাজার মানুষ সেখানে পৌঁছলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। থানার বাইরে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়।

এদিকে, উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে সেই সময় একটি মসজিদের লাউড স্পিকারের মাধ্যমে ঘোষণা করা হয় যে ছেলেটিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তখন পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়। উত্তেজিত জনতার ভিড় কমতে থাকে। কিন্তু, যখনই পরে ক্ষুব্ধ জনতা জানতে পারে যে ছেলেটি এখনও জীবিত এবং পুলিশ হেফাজতে রয়েছে তখন বিক্ষোভকারীরা আর উত্তেজিত হয়ে ওঠে। তারা কিশোরকে হস্তান্তরের দাবি জানায়। এরপর মধ্যরাতে পরিস্থিতি ব্যাপক উত্তেজিত হয়ে ওঠে। সেনাবাহিনী এবং নৌবাহিনীও সেখানে উপস্থিত হয়। তাসত্ত্বেও ক্ষুব্ধ জনতা থানায় হামলা চালায়। এরপর কার্যত পুলিশের কাছ থেকে উৎসবকে ছিনিয়ে নিয়ে মারধর করে এবং কোপাতে শুরু করে। ঘটনায় গুরুতর আহত হয় ওই কিশোর। দ্রুত সেনা কর্মীরা তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। পুলিশ প্রশাসন সংখ্যালঘুদের রক্ষা করতে ব্যর্থ বলে নিন্দা করেছে। সংস্থাটির তরফে জানানো হয়েছে, গণপিটুনির ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস সংখ্যালঘুদের উপর হিংসার ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশের হিন্দুদের বিরুদ্ধে যে হিংসার ঘটনা ঘটছে তা সাম্প্রদায়িকতার থেকে বেশি হল রাজনৈতিক। কারণ সংখ্যালঘু ও হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকাংশ মানুষই শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন তৎকালীন সরকার আওয়ামী লিগকে সমর্থন করত।