‘‌কেন্দ্রের উচিত এটা গ্রহণ করা’‌, ধর্ষণ বিরোধী কঠোর আইনের বিল নিয়ে মন্তব্য বিমানের

আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। আর তার জেরে হাসপাতালে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ–আন্দোলনের ঢেউ আছড়ে পড়েছে। এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা খবর চাউর হচ্ছে। এই আবহে ‘‌অপরাজিতা’‌ বিল নিয়ে মুখ খুললেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, বৃহস্পতিবার এই বিল নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সদর্থক ভূমিকা নেওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন। এমনকী কর্মবিরতিতে থাকা ডাক্তারদের কাজে ফেরার অনুরোধ করেন স্পিকার।

বুধবার রাতেও চিকিৎসকদের ডাকে সাড়া দিয়ে মানুষ রাস্তায় নেমেছিলেন। বাড়ির আলো নিভিয়ে মোমবাতি নিয়ে প্রতিবাদে নামেন। অন্ধকারে ঢেকে যায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল থেকে রাজভবন। আর রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়া ‘অপরাজিতা’‌ বিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে পাঠাচ্ছেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বিষয়টি নিয়ে আজ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘সবাই ফাঁসি চাইছে। সঠিক সময়ে এই বিল এসেছে বিধানসভায়। কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত এটা গ্রহণ করা। আগে যদি কেন্দ্রীয় সরকার এটা করত তাহলে রাজ্যকে এটা করতে হতো না। তাই আশা রাখি রাজ্যপাল সম্মতি দেবেন।’‌

আরও পড়ুন:‌ নির্যাতিতার নাম–ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়াচ্ছে, রিপোর্ট তলব কলকাতা হাইকোর্টের

এই বিষয়টি নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার জোর চর্চা শুরু হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভায় সর্বসম্মতিতে পাশ হয় ‘অপরাজিতা নারী ও শিশু বিল’ (পশ্চিমবঙ্গ ফৌজদারি আইন সংশোধনী বিল, ২০২৪)। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, নির্যাতিতার শরীরে যদি একাধিক আঘাতের চিহ্ন থাকে, আর অত্যাচারের ভয়াবহতায় নির্যাতিতা যদি কোমায় চলে যান বা অচৈতন্য হয়ে পড়েন সেক্ষেত্রে দোষ প্রমাণিত হলে মৃত্যুদণ্ড হবে অপরাধীর। বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‌রাস্তায় দাঁড়িয়ে খালি জাস্টিস চাই বললেই হয় না। পদ্ধতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সবাই ফাঁসি চাইছে। সঠিক সময়ে এই বিল এসেছে বিধানসভায়।’‌

আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এই মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। এখন এই মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। সেখানে বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল পাঠানো হয় রাজভবনে। ওই বিলে রাজ্যপাল স্বাক্ষর করলে সেটা আইনে পরিণত হয়। রাজ্যপাল যদি বিল নিয়ে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে না পারেন তাহলে সেটি রাষ্ট্রপতি ভবনে পাঠান। তখন রাষ্ট্রপতিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‌মানবিক দিক বিচার করে এবার চিকিৎসকদের কাজে ফেরা উচিত। বিচার সবাই চায়। বিচার দেওয়ার একটা প্রক্রিয়া আছে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে খালি জাস্টিস চাই বললেই হয় না। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই জাস্টিস আসবে। নাগরিক সমাজ বলছে। ছাত্র সমাজ বলছে। অথচ তারাই জেল থেকে বেরিয়ে সাধুবাদ জানাচ্ছে বিরোধী দলনেতাকে। সবাই বুঝতে পারছেন পেছনে কারা আছে।’‌