একমাসে চট্টগ্রাম কারাগারে বন্দি কমেছে ১৮০০

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে কমেছে বন্দির সংখ্যা। গত একমাসে এ কারাগারে বন্দি কমেছে প্রায় এক হাজার ৮০০ জন। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ৫০ জন আসামি জামিনে মুক্তি পেলেও বিভিন্ন অপরাধে কারাগারে যাচ্ছেন গড়ে ২০ জন করে।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিল তিন হাজার ৪৭৬ জন। এর মধ্যে কয়েদি ৯৪৮ ও হাজতি দুই হাজার ৫২৮ জন। বন্দিদের মধ্যে পুরুষ তিন হাজার ৩০৩ জন ও মহিলা ১৭৩ জন। অথচ এক মাস আগে ৫ আগস্ট এ কারাগারে আটক বন্দির সংখ্যা ছিল পাঁচ হাজার ২৭৭ জন।

এদিকে, চট্টগ্রামে ৩৩টি থানা রয়েছে। এর মধ্যে মহানগরীতে থানার সংখ্যা ১৬টি এবং জেলায় ১৭টি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নগরী ও জেলার বেশ কিছু থানায় হামলা করে বিক্ষুব্ধ লোকজন। এতে অস্ত্র, গুলি লুট করার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি থানা ও পুলিশের স্থাপনায় আগুন দেন তারা। এরপর থেকে থানাগুলোতে কর্মরত প্রশাসনের কার্যক্রমেও চরম স্থবিরতা নেমে এসেছে। 
থানাগুলোতে পুলিশ সদস্যরা ফিরলেও গতি ফেরেনি কার্যক্রমে। স্তিমিত হয়ে পড়েছে মাদক উদ্ধারসহ ওয়ারেন্টভুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেফতার অভিযান।

দুই হাজার ২৪৯ জন ধারণ ক্ষমতার চট্টগ্রাম কারাগারে বর্তমানে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দি রয়েছে ৫৪৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫২১ ও নারী ২৫ জন। 
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দি আছে ১৭৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৭২ ও নারী চার জন। কারাগারে মায়ের সঙ্গে শিশু আছে ২৯ জন। এর মধ্যে ছেলে শিশু ১৩ ও মেয়ে ১৬ জন। বিদেশি বন্দি আছে ছয় জন। এরমধ্যে সাজাপ্রাপ্ত তিন জন।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে জঙ্গি ও উপজাতীয় সংগঠনের ১৯১ জন সদস্য বন্দি রয়েছে। এর মধ্যে জেএমবি হাজতি আছে এক নারীসহ পাঁচজন, জেএমবি কয়েদি আছে তিন জন, নব্য জেএমবির তিনি জন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জেএমবির সদস্য আছে তিন জন, আনসার উল্লাহ বাংলা টিমের একজন, আনসার আল ইসলামের চার জন, হুজির দুই জন, জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার ৩৩ জন, কেএনএফ ১০৬ জন ও কেএনএর সদস্য আছে ৩১ জন।   

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম কারাগারে বর্তমানে বন্দির সংখ্যা অনেক কমেছে। গত এক মাসে প্রায় ১৮০০ বন্দি কমেছে। বন্দি কমে যাওয়ায় আটক বন্দিরা স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে পারছেন। আরামে ঘুমাতে পারছেন।’

তিনি বলে, ‘চট্টগ্রাম থেকে দৈনিক ৫০ জনের মতো বন্দি জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন। তবে কারাগারে দৈনিক ২০ জনের মতো বন্দি বিভিন্ন মামলায় আসছে।’

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘৫ আগস্টের পর পুলিশ এক ধরনের ট্রমার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের মনোবল ফেরানোর কাজ করছি। এখনও অনেক থানায় পুলিশ সদস্যরা কাজে যোগদান করলেও কাজে গতি আসেনি। ইতিমধ্যে ১২টি থানার ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বাকি থানার ওসিদেরও প্রত্যাহার করা হবে। শুধু তাই নয়, অনেক থানায় বিভিন্ন পদের পুলিশ সদস্যদেরও বদলি করা হবে।’