‘৩৬ জুলাই এমনি এমনি হয়নি, আমরা রেহাই পেয়েছি’

মৌলভীবাজারের নবাগত পুলিশ সুপার (এসপি) এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেছেন, ‘৩৬ জুলাই এমনি এমনি হয়নি। মানুষের ভেতর পাথরচাপা দেওয়া ছিল। কেউ কথা বলতে পারতো না, কাজ করতে পারতো না, লিখতে পারতো না। সাংবাদিকরা কিছু বলতে পারতো না, লিখতেও পারত না। সাংবাদিককে মানুষ জাতির বিবেক মনে করে, কিন্তু কতিপয় সে প্রত্যাশার জায়গায় ছিল না। তারা আন্দোলনের সময় ছাত্রদের কীভাবে হত্যা করা যায়, সে ব্যাপারে অপরাধীদের অনুপ্রাণিত করতে দেখেছি। আবার এমনও সাংবাদিক ছিলেন যারা ছাত্র আন্দোলনকে বেগবান করতে তাদের পাশে ছিলেন। সব জায়গায় কিন্তু দুর্বৃত্তায়ন সব সময়ই আছে। সব জায়গায়ই ঘোলাটে পরিবেশ ছিল। সেখান থেকে আমরা রেহাই পেয়েছি।’

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা পুলিশ কার্যালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

সাম্প্রতিক মামলার বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ‘যাদের মামলার আসামি করা হয়েছে তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। পুলিশ বিগত সময়ে লেজুড়ভিত্তিক একটা রাজনৈতিক সংগঠনের হয়ে কাজ করতো। আপনারা নিশ্চিত হবেন, বর্তমান সরকার জনগণের সেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। এই নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ এখন থেকে সেই রাজনৈতিক লেজুড়ভিত্তিক দুর্বৃত্তায়নের কাজকর্ম থেকে বেরিয়ে আসার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। সেই প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছে।’

অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর সুযোগসন্ধানী অপরাধীরা সুযোগ পেয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করছে। কোনও জায়গায় পুলিশের চাঁদাবাজি হবে না। কোথাও কোনও চাঁদাবাজি দেখলে জানানোর জন্যও অনুরোধ করছি। পুলিশ জনগণের সেবক। সে কখনও চাঁদাবাজ হতে পারে না। আপনি নিজে চাঁদাবাজ হলে কীভাবে চাঁদাবাজকে রোধ করবেন। পুলিশ হবে জনবান্ধব। পুলিশ হবে রাষ্ট্র ও জনগণের। যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করেছিল, আপনারা নিশ্চিত থাকেন এর সঙ্গে যারা জড়িত তারা কেউ কোনোভাবেই রেহাই পাবে না। এরা আমাদের ব্যক্তিগত শত্রু নয়। এরা স্বাধীনতার শত্রু। তারা আমাদের বাকস্বাধীনতা ও মুক্তভাবে লিখার শত্রু। তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া যাবে না।’

এ সময় জেলা পুলিশের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায় (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহসিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম প্রমুখ।

মতবিনিময় সভায় মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।