জাতীয় সড়কে মারাত্মক পথ দুর্ঘটনা, পুলিশের সাহায্যে প্রাণে বাঁচলেন জুনিয়র ডাক্তার ও তার পরিবার

আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। তা নিয়ে এই বাংলা উত্তাল হয়েছে। রাজপথে নেমেছে মানুষ। জুনিয়র ডাক্তাররা লাগাতার আন্দোলন করে চলেছেন। ইতিমধ্যেই তার জেরে ২৪ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে বিনা চিকিৎসায় বলে অভিযোগ। এই আবহে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়ার ডাক্তার সৃষ্টি এক্কা এবং তাঁর পরিবার প্রাণে বেঁচে গেলেন। পুলিশের সাহায্যেই প্রাণে বাঁচলেন গোটা পরিবার। বিনা চিকিৎসায় ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজে প্রাণ হারাতে হয়নি। বরং দ্রুত চিকিৎসা করিয়ে তাঁদের সুস্থ করে তোলা হয়। এমনকী দেখা গেল, স্যালাইন ধরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন সেই পুলিশ কর্মী।

কলকাতায় আরজি কর হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের দড়ি টানাটানি এখনও চলছে। সেটা আজ অথবা কাল মিটে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তার মধ্যে বারবার স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। লালবাজার অভিযান করেছেন। অথচ এবার সেই পুলিশই ডাক্তারের প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া লড়াই করলেন। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের পিডিয়াট্রিক্স বিভাগের ছাত্রী ডাঃ সৃষ্টি এক্কা। বাবা–মা, বোনকে নিয়ে ছত্তিশগড় যাচ্ছিলেন। ঝাড়গ্রামে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর হঠাৎ একটি মালবাহী ট্রাক ওই গাড়িটির পিছনে ধাক্কা মারে। তখন সামনে থাকা আার একটি গাড়িতে গিয়ে ধাক্কা মারে চিকিৎসকের গাড়ি। সামনে–পেছনে দুমড়ে মুচড়ে যায়। গাড়িতেই আটকে পড়েন ডাঃ সৃষ্টি এক্কা, বোন আশা এক্কা, মা কমলাবতী এক্কা এবং তার বাবা।

আরও পড়ুন:‌ চা–বাগানের শ্রমিকদের বোনাস এখনও নিষ্পত্তি হল না, ডুয়ার্সের হাট ব্যবসায়ীরা অপেক্ষায়

ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, সমস্ত মেডিক্যাল কলেজে অধ্যক্ষই হবে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান। তার সঙ্গে থাকবেন নার্স, জুনিয়র ডাক্তার এবং স্থানীয় থানার পুলিশ। এবার এই পুলিশকেই এগিয়ে আসতে দেখা গেল। আর ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ঝাড়গ্রাম থানার এসডিপিও সামিম বিশ্বাস এবং আইসি বিপ্লব কর্মকার। সেখানে আগেই ছিলেন মানিকপাড়ার বিট অফিসার। তিনি গ্যাসকাটার জোগাড় করে গাড়ি কেটে বের করার কাজ করতে থাকেন। এসডিপিও, আইসি, ওসিরাই প্রত্যেককে বের করে গাড়িতে তুলতে শুরু করেন। চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজের দিকে।

এই বিষয়টি নিয়ে এখন চারদিকে আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে উল্টো ঘটনাও শহরে ঘটেছে। স্বাস্থ্য ভবনের সামনে এক মহিলা পুলিশ অফিসার অসুস্থ হয়ে পড়ায় এক জুনিয়র ডাক্তার তাঁর প্রাণ বাঁচান। এবার পুলিশ বাঁচাল ডাক্তার এবং তাঁর পরিবারের প্রাণ। যা মানবিক দৃশ্য হয়ে রয়ে গেল। পুলিশের টিম দাঁড়িয়ে থেকে গোটা চিকিৎসা ব্যবস্থা করতে সাহায্য করেন। কোমর থেকে নীচের অংশে মারাত্মক জখম হন সৃষ্টি এক্কা। তার মা এবং বোনের অবস্থাও জটিল। তার পরিবারকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন পুলিশ। খোঁজ নেন, সবাই কেমন আছেন। এই বিষয়ে ঝাড়গ্রাম এমএসভিপি অনুরূপ পাখিরা বলেন, ‘‌তখন ‌প্রত্যেকটা মিনিট খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পুলিশ যেভাবে দ্রুত সকলকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে তাতেই সবাই এখন বিপদের বাইরে।