ডাক্তারদের কর্মবিরতিতে বিনা চিকিৎসায় ২৯ জনের মৃত্যুর দাবি মমতার

পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় নবীন চিকিৎসকদের চলমান কর্মবিরতির কারণে এখন পর্যন্ত রাজ্যে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) মমতা ঘোষণা দিয়েছেন, এই ২৯ জনের প্রত্যেকের পরিবারকে দুই লাখ রুপি করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। তবে আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা মমতার এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। কলকাতাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ এ খবর জানিয়েছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, নবীন চিকিৎসকদের কর্মবিরতির ফলে স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে।এর ফলে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে রাজ্য সরকার দুই লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেবে।

পশ্চিমবঙ্গে নবীন চিকিৎসকদের এই কর্মবিরতি চলছে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে। আরজি কর হাসপাতালে এক চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে তারা আন্দোলন করছেন। বর্তমানে চিকিৎসকরা সল্টলেকের স্বাস্থ্যভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। শুক্রবার ছিল তাদের অবস্থান কর্মসূচির চতুর্থ দিন। রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ ও সরকারি হাসপাতালের নবীন চিকিৎসকরা এই কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন।

রাজ্য সরকার বলেছে, কর্মবিরতির কারণে সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা পরিষেবা বিপর্যস্ত এবং অনেক রোগী বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন। তবে, আন্দোলনরত চিকিৎসকরা রাজ্যের এই দাবি সরাসরি উড়িয়ে দিয়েছেন। তাদের মতে, সিনিয়র চিকিৎসকরা স্বাভাবিকভাবে চিকিৎসা পরিষেবা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং কোনও রোগীকে বিনা চিকিৎসায় ফিরে যেতে হচ্ছে না।

নবীন চিকিৎসকদের যুক্তি, রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার বেহাল অবস্থার কারণেই প্রতিদিন বহু মানুষ ঠিকমতো চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাচ্ছেন। এই ব্যর্থতাকে আড়াল করতেই সরকার চিকিৎসকদের কর্মবিরতিকে দোষারোপ করছে।

কর্মবিরতির জটিলতা নিরসনে বৃহস্পতিবার তাদের প্রতিনিধিদের নবান্নে বৈঠকের জন্য ডাকা হয়েছিল। তবে, বৈঠক ভেস্তে যায়। চিকিৎসকদের দাবি ছিল, বৈঠক সরাসরি সম্প্রচার করতে হবে, যা নবান্ন মানতে রাজি হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এরপর সাংবাদিক বৈঠকে জানান, সুপ্রিম কোর্টে বিষয়টি বিচারাধীন থাকায় সরাসরি সম্প্রচার সম্ভব নয়। তবে তিনি চিকিৎসকদের ক্ষমা করে দেওয়ার কথাও বলেছেন এবং মানুষের কাছেও তিন দিনে সমস্যার সমাধান করতে না পারায় ক্ষমা চেয়েছেন।