দল আর মার্কার সময় শেষ, এখন সময় যোগ্যতা দেখার: সারজিস আলম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, দেশের সংসদীয় আসনে পঞ্চগড় এক নম্বর। তাই পঞ্চগড় থেকে আগামী রাজনীতিতে আমার সামনে বসে থাকা যারা আমাদের বোন রয়েছেন, যারা আমাদের ভাই রয়েছেন, তাদের আমরা সংসদে দেখতে চাই। তাদের আমরা এমপি হিসেবে দেখতে চাই, মন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই কিংবা রাষ্ট্রপতি হিসেবে দেখতে চাই, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই। 

স্থানীয় জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যে আপনাদের কথা শুনবে, আপনাদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবে, তাকেই আগামী সংসদে আপনার প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচন করবেন। একটা জিনিস মনে রাখবেন, দল আর মার্কা দেখার সময় শেষ, এখন সময় যোগ্যতা দেখার।’

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে পঞ্চগড় মকবুলার রহমান সরকারি কলেজ মাঠে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত গণঅভ্যুত্থানের প্রেরণায় শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছাত্র-নাগরিক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সারজিস আলম বলেন, ‘পঞ্চগড় সীমান্তবর্তী একটি জেলা। এই পঞ্চগড়ের ভাইয়েরা ভারতের সীমান্তে যাওয়ার আগেই বিএসএফের গুলি খেয়ে মরতে হয়। পঞ্চগড়ের মানুষ কি নিজের ভূমিতে থেকে গুলি খাওয়ার জন্য জন্মগ্রহণ করেছে? এর প্রতিটি গুলির বিচার ওই ফ্যাসিস্ট হাসিনা করতে পারেনি। আমরা পঞ্চগড়ের মানুষ স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ওই খুনি হাসিনা থেকে শুরু করে যারা এই বিচারগুলো করতে দেয়নি, যারা ভারতের সেবাদাস হিসেবে ছিল, তাদের বিচার করতে হবে।’

সারজিস হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘আজকের পর থেকে এই পঞ্চগড় নিয়ে যদি কোনো বৈষম্য হয়, তাহলে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান-এই চার দেশের যে সীমান্ত, এই চার দেশের যে গলা, এই চার দেশের যে নিশ্বাস, এই চার দেশের যে হৃৎপিণ্ড, সেই হৃৎপিণ্ড তেঁতুলিয়া-বাংলাবান্ধা আমরা চিরতরে বন্ধ করে দেবো।’

তিনি বলেন, সরকার বদলের পরও কি চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছে? এই জন্য কি আমরা আন্দোলন করেছিলাম? একটা কথা মনে রাখবেন, পঞ্চগড়ের মানুষের পেশি রিকশাচালকের পেশি, ধান কাটার পেশি। আমরা রাস্তায় নামলে চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেটের মূল উৎখাত করে ছাড়বো।

অভিভাবকদের উদ্দেশে সারজিস বলেন, আজকের পর থেকে আপনাদের সন্তানদের শুধু ডাক্তার আর ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখানো বাদ দেন। আপনার সন্তানকে হয় রাজনৈতিকভাবে সচেতন হয়ে উঠতে বলুন, না হয় যোগ্য সৎ মেধাবী ন্যায়পরায়ণ রাজনীতিবিদ হয়ে উঠতে বলুন। কারণ সংসদে যে ভাগ্য নির্ধারণের জায়গা সেখানে রাজনীতিবিদরা ভাগ্য নির্ধারণ করেন। তাই দেশের ভাগ্য নির্ধারণে তাদের রাজনীতিতে আসতে হবে।

সভায় আরও বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম, রাকিব রানা মাসুদ, আবু সাইদ লিয়ন, মিশু আলী সুহাস, সহসমন্বয়ক জহির রায়হান প্রমুখ।

এতে আরও উপস্থিত ছিলেন পঞ্চগড়ের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী, মোকাদ্দেসুর রহমান সান, খোরশেদ মাহমুদ, মখলেছার রহমান, হাবিবুর রহমান শাওনসহ পাঁচ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ মানুষ।