দুর্গাপুজোর হোর্ডিংয়ে বিজ্ঞাপন সংস্থা–কমিটির নাম বাধ্যতামূলক, ফরমান জারি কলকাতা পুরসভার

হাতে আর একমাসও সময় নেই। দুয়ারে কড়া নাড়ছে শারদোৎসব। রাস্তাঘাটে বাঁশের রেলিং বাঁধা হয়েছে। প্যান্ডেল তৈরির কাজ চলছে জোরকদমে। ওই বাঁশের রেলিংয়ে বসবে বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং। উৎসবের আমেজে শহর এভাবেই সেজে উঠতে শুরু করেছে। আর কদিনের মধ্যেই দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে অস্থায়ী বিজ্ঞাপনে ছেয়ে যাবে কলকাতার রাজপথ। এগুলিকে ‘‌অস্থায়ী বিজ্ঞাপন’‌ বলা হচ্ছে কারণ, দুর্গাপুজো মিটলেই এগুলি খুলে নেওয়া হয়। আবার প্রাসঙ্গিকতা হারায় বলেই এমন সম্বোধন। ২০২৩ সালে দুর্গাপুজোর পর এই অস্থায়ী বিজ্ঞাপন সরাতে গিয়ে রীতিমতো কালঘাম ছুটে গিয়েছিল কলকাতা পুরসভার। তাই আগাম সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। এই কারণেই নয়া ফরমান জারি করেছে কলকাতা পুরসভা।

২০২৩ সালের দুর্গাপুজোয় দেখা গিয়েছিল, কোনও বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং, ব্যানার কে বা কারা কোথায় লাগাচ্ছে সেটার কোনও স্পষ্ট তথ্য ছিল না। আর তা থাকায় কোনও অভিযোগ এলে দ্রুত পদক্ষেপ করা যাচ্ছিল না। তাই এবার দুর্গাপুজোর বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং বা ব্যানারের তলায় বিজ্ঞাপনদাতা সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট দুর্গাপুজো কমিটির নাম থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এমনকী এই বিষয়ে কলকাতা পুরসভা সাফ জানিয়ে দিয়েছে, বিজয়া দশমী থেকে একসপ্তাহের মধ্যে খুলে ফেলতে হবে সমস্ত ‘‌অস্থায়ী বিজ্ঞাপন’‌। আর সেটা করা না হলে কলকাতা পুরসভাই বিজ্ঞাপন খুলে নিয়ে বাঁশ ও অন্যান্য সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করবে।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌যে যা খাবার দিচ্ছে সব খাবেন না’‌, ধরনা মঞ্চে উপস্থিত হয়ে দিদির সতর্কবার্তা জুনিয়র ডাক্তারদের

দুর্গাপুজোর সময় একদিকে আলোর রোশনাই অপরদিকে নানা বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং। এটাই দেখতে অভ্যস্ত কল্লোলিনী কলকাতার বাসিন্দারা। কিন্তু এই অস্থায়ী বিজ্ঞাপনের হোর্ডিংয়ের জেরে কারও বাড়ি বা জানালা সম্পূর্ণ আটকে যায়। তখন কলকাতা পুরসভার কাছে অভিযোগ এলে ওই অস্থায়ী বিজ্ঞাপন নামানোর ব্যবস্থা করা হয়। অথচ ওই বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং কোন দুর্গাপুজো কমিটির আওতায় কোন বিজ্ঞাপনদাতা সংস্থা দিচ্ছে সেটার খোঁজ সহজে মেলে না। এই বিষয়ে কলকাতা পুরসভার বিজ্ঞাপন বিভাগের এক অফিসার বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্যান্ডেলের সামনে বা পাশে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেখান থেকে কোনও অর্থই পায়নি সংশ্লিষ্ট দুর্গাপুজো কমিটি। তাই এবার প্রত্যেক বিজ্ঞাপন এজেন্সিকে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, দুর্গাপুজোর বিজ্ঞাপনে হোর্ডিংয়ে সংস্থার নাম এবং পুজো কমিটির নাম রাখতেই হবে। যাতে অভিযোগ এলে সেই হোর্ডিং নামানোর ব্যবস্থা তাদের করতে হবে।’‌

কলকাতা পুরসভার এই ফরমান জারি হওয়ার পর থেকেই সতর্ক হয়ে গিয়েছে বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলি। আর দুর্গাপুজো কমিটিগুলিও সতর্কতা অবলম্বন করতে শুরু করেছে। এই বিষয়ে আর এক কলকাতা পুরসভার কর্তা বলেন, ‘এই বছর স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে, দশমীর পর থেকে একসপ্তাহের মধ্যে সমস্ত অস্থায়ী বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং খুলে ফেলতে হবে। তবে বিজ্ঞাপন এজেন্সিগুলি বাড়তি কদিন সময় চেয়েছে। সেটি আমাদের বিবেচ্য বিষয়। কিন্তু ২০২৩ সালে যেভাবে দুর্গাপুজোর বিজ্ঞাপন না নামানোয় মাসের পর মাস পড়ে থাকার পর সেগুলি কলকাতা পুরসভাকেই খুলতে হয়েছে। এবার এসব বরদাস্ত করা হবে না। জরিমানার পথেও হাঁটতে পারে পুরসভা।’