জুনিয়র ডাক্তারদের ধরনায় মমতা, বললেন, আমি একা সরকার চালাই না, তবে বিবেচনা করব

সবাইকে চমকে দিয়ে শনিবার দুপুরে জুনিয়র ডাক্তারদের ধরনা মঞ্চে হাজির হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার বেলা ১ টা নাগাদ বিধাননগরের স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধরনা মঞ্চে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে আন্দোলনকারীদের প্রতি ১০ মিনিট বক্তব্য রাখেন তিনি। তার পর সেখান থেকে বেরিয়ে যান মমতা। এদিন মমতা আন্দোলনকারীদের দাবিগুলি বিবেচনার আশ্বাস দিয়ে ধরনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। সঙ্গে জানান, জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রতি কোনও পদক্ষেপ করবেন না তিনি।

আরও পড়ুন – মানুষের হাসপাতালে তৃণমূল নেতার কুকুরের চিকিৎসা! বিস্ফোরক অভিযোগ শুভেন্দুর

পড়তে থাকুন – ‘এখনই প্রতিরোধ না হলে আরও অনেক তিলোত্তমাকে এভাবে চলে যেতে হতে পারে’

 

এদিন মমতা বলেন, ‘আমার সেফটি, সিকিওরিটির বারণ থাকা সত্বেও আমি নিজে আপনাদের এখানে ছুটে এসেছি তার কারণ, আমি আপনাদের আন্দোলনকে কুর্ণিশ জানাই। আমি নিজে ছাত্র আন্দোলন থেকে উঠে আসা লোক। আমি নিজেও অনেক সাফার করেছি জীবনে। আমার পদটা বড় কথা নয়, মানুষের পদটাই বড় কথা। কাল সারারাত ঝড়জল হয়েছে। আপনারা যখন কষ্ট পেয়েছেন আমিও সারারাত ঘুমাতে পারিনি। আমারও কষ্ট হয়েছে। আপনারা জেগে থাকলে পাহারাদার হিসাবে আমাকেও জেগে থাকতে হয়। এত ঝড়বৃষ্টির মধ্যে আপনারা অনেক কষ্ট পেয়েছেন আর কষ্ট না করে যদি আপনারা কাজে ফিরতে চান আমি আরনাদের প্রতিশ্রতি দিচ্ছি, আমি আপনাদের দাবিগুলো কথা বলে সহানুভূতির সাথে স্টাডি করব। আমি অফিসারদের সঙ্গে কথা বলব। আমি একা সরকার চালাই না। আমার সাথে একটা চিফ সেক্রেটারি, হোম সেক্রেটারি, ডিজি পুলিশ সবাই আছেন। যদি কেউ দোষী হয় তিনি নিশ্চই শাস্তি হবে। আমি চাই তিলোত্তমার বিচার হোক। আমি সিবিআইকে অনুরোধ করব যত তাড়াতাড়ি বিচার হোক। তিন মাসের মধ্যে তারা যেন ফাঁসির অর্ডার দেয়। আর আপনাদের বলব, আমাকে একটু সময় দিন। আমি বিষয়গুলি নিয়ে চিন্তা ভাবনা করব। যদি আপনাদের আস্থা ভরসা আমার ওপর থাকে। আমি কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব।’

জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে ফেরার আহ্বান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা আমাদেরই ঘরের ভাই বোন। আপনারা কাজে যোগদান করুন। আমি বলতে পারি, আপনাদের প্রতি আমি কোনও অবিচার করব না।’

মমতার আশ্বাস, ‘হাসপাতালের উন্নয়নের সব কাজ আমরা শুরু করে দিয়েছি। আমি সব হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান করব সেই হাসপাতালের অধ্যক্ষকে। আমি আরজি কর সহ সমস্ত হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতি ভেঙে দিলাম। অধ্যক্ষ, জন প্রতিনিধি, পুলিশ, জুনিয়র ডাক্তার, সিনিয়র ডাক্তার ও নার্সদের নিয়ে নতুন করে রোগীকল্যাণ সমিতি গঠন করা হবে।’

একই সঙ্গে দুর্নীতিতে অভিযুক্তের সঙ্গে নিজের দূরত্ব বাড়ানোর চেষ্টা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘যদি সত্যি কেউ দোষী হয় সে শাস্তি পাবে। দোষীরা কেউ আমার বন্ধু নয়, দোষীরা কেউ আমার শত্রুও নয়। আপনারা যারা ভাবছেন, কেউ আমার বন্ধু। আমি তাদের চিনিই না। আমি তাদের জানি না। আমাদের সাথে কোনও সম্পর্ক নেই। তারা এসেছেন প্রসেসের মাধ্যমে। এই প্রসেস ফাইনাল হয়ে আমার কাছে আসে। এক মাসের মধ্যে যারা এসেছেন তাদের কেউ যদি খুনের সঙ্গে, দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকে আমি নিশ্চই সাধ্যমতো চেষ্টা করব কথা বলে অ্যাকশন নেওয়ার।’

আরও পড়ুন – খুনি ডাক্তারের শাস্তি চাই, সন্ধের পর পথে নেমে স্লোগান তুললেন কল্যাণ

চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হবে না বলে আশ্বস্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘আমি কোনও অ্যাকশন নেবো না। আমি ইউপি পুলিশ নই। ওরা এসমা জারি করেছিল। ওরা ছ’মাস স্ট্রাইক – র্যালি বন্ধ করে দিয়েছিল। আমি এসব করব না। কোনও ডাক্তারের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়ার আমি বিরুদ্ধে।’