Mamata and Tala Thana ‘OC’: ‘টালার সুস্থ ওসিকে ভরতি নেয়নি কেন? হাসপাতালের বিরুদ্ধে অ্যাকশনের নিদান দেন মমতা’, ধরল CBI

আরজি কর হাসপাতালের ধর্ষণ মামলায় টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। আর তারপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ শানালেন বিজেপির যুবমোর্চার রাজ্য সভাপতি ইন্দ্রনীল খাঁ। তিনি দাবি করেছেন, সিবিআইয়ের হাতে যে খুব শীঘ্রই গ্রেফতার হবেন, সেটা অনুধাবন করে হাসপাতালে ভরতি হতে চেয়েছিলেন অভিজিৎ। কিন্তু তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছিল কলকাতার চারটি হাসপাতাল। আর সেজন্য ওই হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর সেই নির্দেশের পাঁচদিনের মাথায় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় অভিজিৎকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই।

‘গ্রেফতারি এড়াতে হাসপাতালে-হাসপাতালে ছুটছিলেন’

শনিবার অভিজিতের গ্রেফতারির পরে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে বিজেপির যুবমোর্চার রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘কখনও ভুলবেন না। টালা থানার (প্রাক্তন) ওসিকে ভরতি নিতে না চাওয়ায় প্রশাসনিক বৈঠক থেকে আমাদের স্বাস্থ্যসচিবকে হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী। যে টালা থানার (প্রাক্তন) ওসিকে দৃশ্যতই ফিট লাগছিল। তাঁকে এখন গ্রেফতার করা হয়েছে। সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতারি এড়াতে উনি এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ছুটে বেড়াচ্ছিলেন।’

‘পুলিশের একজন ওসি’-কে নিয়ে বলেছিলেন মমতা

বিজেপির যুবমোর্চার রাজ্য সভাপতি যে ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন, তাতে মুখ্যমন্ত্রী অভিজিতের নাম নেননি। তবে গত ৯ সেপ্টেম্বর নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে ‘পুলিশের একজন ওসি’-কে ভরতি না নেওয়ায় একাধিক হাসপাতালের উপরে উষ্মাপ্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, ‘এমনকী কয়েকটা প্রাইভেট হসপিটাল…সেদিন শুধু আমি স্পর্ধা দেখলাম। চারটে নাম আমার কাছে আছে। পুলিশের একজন ওসি, সে তো তোমার কাছে একজন পেশেন্ট হিসেবে গিয়েছে। তুমি তাকে ভরতি নাও নি।’

আরও পড়ুন: Junior Doctors’ on Kalighat meeting: ‘সন্দীপের গ্রেফতারির খবর পাওয়ায় হয়তো আমাদের সঙ্গে মিটিংয়ের সাহস হয়নি’

তারপর রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবকে উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘এই হাসপাতালগুলোর কথা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। নারায়ণ, আমি যে বলেছিলাম, তাদের ডেকে মিটিং করতে, তুমি করেছিলে?’ সেই প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যসচিব বলেছিলেন, ‘ইয়েস, ম্যাডাম মিটিং হয়েছে। ওরা আমাদের পুরো আশ্বাস দিয়েছে।’

স্বাস্থ্যসচিবের সেই মন্তব্যের পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘যারা রিফিউজ করেছিল, তাদের বিরুদ্ধে কি অ্যাকশন হয়েছে? তারা তো টাকা নিয়ে করছে। আজ তুমি আমায় যে রিপোর্ট দিয়েছো, তা থেকে আমি জানতে পারছি, অনেকে এখানে কাজ করছেন না। কিন্তু প্রাইভেট হসপিটালে গিয়ে কাজ করছেন। ইজ ইট নট অ্যা ফ্যাক্ট?’

আরও পড়ুন: Junior Doctors blame Chandrima: ‘ভিডিয়ো ছাড়াই বৈঠকে রাজি হই, তাও কার্যত ঘাড়ধাক্কা বের করে দিলেন চন্দ্রিমা’

অভিজিতের বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ উঠেছে?

অভিযোগ উঠেছে যে গত ৯ অগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পরে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছিলেন টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ। সেইসঙ্গে অনেক দেরিতেও এফআইআর রুজু করেছিলেন। শুধু তাই নয়, ১৪ অগস্টে আরজি কর হাসপাতালে যখন তাণ্ডব চলেছিল, তখন তিনিই টালা থানার ওসি পদে ছিলেন।

আরও পড়ুন: Junior Doctors vs Mamata: ‘এত অসম্মান কেন করছো? প্লিজ এটুকু রেসপেক্ট দাও’, ডাক্তারদের চা খাওয়ার আর্জি মমতার

সেই বিতর্কের মুখে সেপ্টেম্বরের গোড়াতেই টালা থানায় নয়া ওসি বসানো হয়। একটি মহলের তরফে দাবি করা হয় যে অসুস্থতার কারণে ছুটি চেয়েছিলেন অভিজিৎ। হাসপাতালেও ভরতি হয়ে গিয়েছিলেন। যদিও তাঁকে চারটি হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। প্রাথমিক স্বাস্থ্যপরীক্ষার পরে তাঁকে ভরতি নিতে চায়নি ওই চারটি হাসপাতাল।