চলন্ত ট্রেনে বিশ্বকর্মা পুজো, মন্ত্র পাঠ থেকে প্রসাদ বিতরণ, ১৮ বছর ধরে একই আবেগ চলছে

আজ, ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা পুজো। শহর থেকে গ্রামবাংলায় এই শিল্পের দেবতাকে পুজো করছেন মানুষজন। কিন্তু এই বিশ্বকর্মা পুজোকে নিয়ে একটা অভিনব ঘটনাও আছে। আর সেটা হয় জেলায়। ফুল এবং নানা রঙের জিনিস দিয়ে সাজানো হয়েছে গোটা ট্রেন। ট্রেনের কামরায় আরাধনা চলছে বিশ্বকর্মার। এটা শুনতে অবাক লাগলেও বাস্তবে তাই ঘটেছে। চলন্ত ট্রেনেই হয়েছে মন্ত্র পাঠ, পুজো এবং প্রসাদ বিতরণ। গত ১৮ বছর ধরে এভাবেই পালন করা হচ্ছে বিশ্বকর্মা পুজো। নদিয়ার শান্তিপুর লোকালে এভাবেই বছরের পর বছর হয়ে আসছে বিশ্বকর্মার আরাধনা। আর তাতে যোগ দেন নিত্যযাত্রীরা।

আজ শিল্পের দেবতা বিশ্বকর্মার পুজোয় এমন অভিনত্বের কথা সকলের জানা নেই। অথচ এটা কিন্তু প্রত্যেকবছর হয়ে আসছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় জায়গা পায়নি শান্তিপুর লোকালের বিশ্বকর্মা পুজো। তবে এবার এই লোকাল ট্রেনের বিশ্বকর্মা পুজো নিয়ে বেশ হইচই পড়ে গিয়েছে। একদিকে যখন বিভিন্ন কলকারখানা–সহ নানা জায়গায় চলছে দেব শিল্পীর আবাহন। অপরদিকে লোকাল ট্রেনে চলছে বিশ্বকর্মা পুজোও। তবে ব্যতিক্রমী বিশ্বকর্মা পুজো এটাই। এই শান্তিপুর লোকাল চলন্ত ট্রেনে দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে চলছে বিশ্বকর্মা পুজো। তাই আজ নদিয়ার শান্তিপুর–শিয়ালদা লোকাল ট্রেন ঢোকার পরই নিত্যযাত্রীরা কলাগাছ, ফুল দিয়ে সুসজ্জিত করে তোলেন ট্রেনটিকে।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌আমরা কোনও মুখ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগের নির্দেশ দিতে পারি না’‌, আইনজীবীকে ধমক প্রধান বিচারপতির

এখানে শুধু যে নিত্যযাত্রীরা অংশ নেন তা নয়। এখানে সাধারণ মানুষও যুক্ত। বিশেষ করে যাঁরা প্ল্যাটফর্ম চত্বরে বসবাস করেন। আবার অনেকে আছেন যাঁরা প্ল্যাটফর্ম সংলগ্ন বস্তিতে থাকেন। এই সকলেই লোকাল ট্রেনের বিশ্বকর্মা পুজোর সঙ্গে জড়িত। সবাই হাত লাগান পুজোর কাজে। আজ, মঙ্গলবার ট্রেন সাজাবার পর তাঁরা ঢাক বাজিয়ে পুরোহিত সহকারে প্রথমে রেলের ট্র‌্যাক তারপর ট্রেন এবং সর্বশেষে প্রতিমা নিয়ে ১ নম্বর কম্পার্টমেন্টে মহাসমারোহে দেবশিল্পী বিশ্বকর্মার পুজোয় ব্রতী হন। চলন্ত ট্রেনেই চলে পুজোপাঠ। যাত্রীদের দেওয়া হয় পুজোর প্রসাদও।

তবে এখানেই শেষ নয়, বিশ্বকর্মা পুজোর সঙ্গে চলে দেদার আড্ডাও। সকলের যে অফিস আছে সেটা নয়। অনেকেরই ছুটি আছে। আর এই ছুটির দিনটিকেই এভাবে পুজোর কাছে লাগিয়ে আনন্দ উপভোগ করলেন অনেকে। এবার শিয়ালদা পৌঁছানোর আগেই লোকাল ট্রেনে পূজিত হওয়া বিশ্বকর্মাকে ট্রেন থেকে নামিয়ে রেখে দেওয়া হবে সুরক্ষিত একটি জায়গায়। তারপর পরবর্তীতে প্রতিমা বিসর্জনের ব্যবস্থা করা হবে এখান থেকেই। তবে গোটা রাজ্যের মধ্যে এই শান্তিপুর লোকাল ট্রেনেই ঘটা করে এই বিশ্বকর্মা পুজো হতে দেখা যায়।