তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্রের সম্পাদক হচ্ছেন মন্ত্রী শোভনদেব, রাত পোহালেই দায়িত্বে

সুখেন্দুশেখর রায় উইকেট থ্রো করতেই নয়া ব্যাটসম্যান হিসাবে মাঠে নামলেন ভরসার হাত শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এখন তিনি রাজ্যের কৃষিমন্ত্রীও বটে। আবার বিধানসভার পরিষদীয়মন্ত্রীও বটে। এবার এইসবের সঙ্গেই বাড়তি দায়িত্ব মিলল। তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্র ‘‌জাগো বাংলার’‌ সম্পাদক হতে চলেছেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। আসলে রাজনীতির ময়দানের টেস্ট ক্রিকেটে তিনিই তো চিনের প্রাচীর। সহজে বোল্ড আউট করা যাবে না। কারণ তিনি যে কপি বুক ক্রিকেট খেলেন। লোভনীয় ফুল্টস বল পেলেও তিনি কিন্তু স্টেপ আউট করে মারতে যান না। বরং মাটি কামড়ে বল বাউন্ডারি পাঠাতেই অভ্যস্ত। তাই আজ, তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে তাঁকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এদিকে তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে খবর, আজ থেকেই সম্পাদকের নাম পরিবর্তন করা হচ্ছে। সেখানে জ্বলজ্বল করে দেখা যাবে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের নাম। সেটা এবার শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। সম্পাদকের দায়িত্ব পেলেও আজ কাগজের দফতরে যাননি তিনি। আগামীকাল বুধবার তিনি দফতরে গিয়ে সম্পাদকের দায়িত্ব বুঝে নেবেন। এই নয়া দায়িত্ব পাওয়ার পর শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘দল আমাকে যখন যে দায়িত্ব দিয়েছে আমি তখন তা পালন করার চেষ্টা করেছি। এবার দলীয় মুখপত্রের দায়িত্ব আমাকে দিয়েছে, সেই দায়িত্ব নিজের সাধ্যমতো পালন করার চেষ্টা করব।’

আরও পড়ুন:‌ ‘‌অভিযোগ করার স্বাধীনতা আছে, প্রমাণ করার দায় নেই’‌, বিধানসভায় দাঁড়িয়ে আক্ষেপ মানিকের

অন্যদিকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় আগে এই পদে ছিলেন। গ্রেফতার হয়ে জেলে যাওয়ার পর ওই দায়িত্ব বর্তায় রাজনীতির স্লগ ওভারের ব্যাটসম্যান সুখেন্দুশেখর রায়। আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করার পর থেকেই সুখেন্দুশেখর রায় বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন। দলের হয়ে ব্যাট ধরার পরিবর্তে উগরে দিচ্ছিলেন ক্ষোভ। এক্স হ্যান্ডেলে সেসব দেখেছেন সকলেই। এবার কলকাতা পুলিশ এবং রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবর্তন করার কথা ঘোষণা করার পরই মুখপত্রের সম্পাদক পদ থেকে সরে দাঁড়ান সুখেন্দুশেখর রায়। রাজনীতির ময়দানে এটাকেই নিজের উইকেট থ্রো বলা হচ্ছে।

এছাড়া ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পরই সুখেন্দুশেখর রায়কে রাজ্যসভার সংসদীয় দলের মুখ্যসচেতক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। যাকে বলা হয় ওপেনিং ব্যাটসম্যানের জায়গা থেকে সরিয়ে মিডল অর্ডারে নামিয়ে আনা। এটা তাঁর নাপসন্দ ছিল। সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন পোড়খাওয়া সুখেন্দু। আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা সেই সুযোগকে বয়ে নিয়ে এসেছিল। তারপর থেকেই বিদ্রোহী খেলোয়াড়দের মধ্যে নিজেকে ঢুকিয়ে নেন সুখেন্দুবাবু। কিন্তু কেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল শোভনদেব?‌ উঠছে প্রশ্ন। যার উত্তর—১৯৯৮ সালে বারুইপুর বিধানসভার কংগ্রেসের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে রাসবিহারী বিধানসভার উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে জয়লাভ করেন। পার্থ জেলে যেতে নেন পরিষদীয়মন্ত্রীর দায়িত্ব। আর নিজের বিধানসভা আসন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছেড়ে দিয়ে যান খড়দায়। সেখানেও মেলে সাফল্য।