CV Ananda Bose: ডিভিসিকে কেন দায়ী করছেন? বন্যা নিয়েও তরজা শুরু, মমতাকে চিঠি রাজ্যপালের

রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বানভাসি অবস্থা। জলের তলায় একের পর এক গ্রাম। খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় সেই জলমগ্ন এলাকা ঘুরে দেখেছেন। এরপরই তিনি এই বন্যাকে ম্যান মেড বন্যা বলে উল্লেখ করেন। ডিভিসির উপর তিনি যাবতীয় দায় চাপিয়ে দিয়েছেন। এদিকে এবার এনিয়ে মুখ খুললেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এই বন্যা পরিস্থিতির জন্য ডিভিসি দায়ী নয়। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে রাজ্যপাল জানিয়ে দিয়েছেন, ডিভিসিকে দোষারোপ না করে রাজ্যের উচিত যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া। 

তবে একেবারে সুনির্দিষ্টভাবে রাজ্যপাল জানিয়ে দিয়েছেন, যে জেলাগুলিতে বন্যার জন্য বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী ডিভিসির উপর দায় চাপিয়েছেন সেগুলি ডিভিসির অববাহিকার মধ্য়ে পড়ে না। তিনি বাঁকুড়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুরের কথা উল্লেখ করেছেন। রাজ্যপাল উল্লেখ করেছিলেন কংসাবতী, শিলাবতী ও দ্বারকেশ্বর নদী এলাকায় প্রচুর বৃষ্টি হয়েছিল। কংসাবতী নদীর উপর মুকুটমণিপুর বাঁধ থেকে প্রচুর জল ছাড়া হয়েছিল। এর জেরে এলাকা প্লাবিত হয়েছে। 

রাজ্যপাল জানিয়ে দিয়েছেন বাঁধ থেকে যদি জল না ছাড়া হয় তবে বাঁধের ক্ষতি হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে ডিভিসির উপর দোষারোপ না করে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য রাজ্য সরকার নিজের দায়িত্ব নিজে পালন করুক। সেই সঙ্গেই বর্তমানে যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে ব্যাখা চেয়েছেন তিনি। 

তবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য এই বন্য়ার পুরো দায় ডিভিসির উপর চাপিয়ে দিয়েছেন। এমনকী ডিভিসির সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করার কথাও জানিয়েছেন তিনি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও চিঠি লিখেছিলেন মমতা। 

সেই চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় লিখেছেন, ২০২১ সালের ৪ঠা অগস্ট ও ৫ অক্টোবর চিঠি লিখেছিলাম। অপ্রত্যাশিত, অপরিকল্পিতভাবে বিপুল জল ছাড়া হয়েছে। মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে প্রায় ৫ লাখ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। এই বাঁধ ডিভিসির। দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা যেমন পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জলে প্লাবিত হয়ে গিয়েছে। এর জেরে সাধারণ মানুষ মারাত্মক সমস্যার মধ্য়ে পড়ে গিয়েছেন। অতীতেও এই ধরনের ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।

মমতা লিখেছেন, ‘২০০৯ সালের পরে নিম্ন দামোদর ও সংলগ্ন এলাকায় ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ১০০০ বর্গকিমি এলাকারও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ৫ মিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। শস্যের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে সম্পত্তির ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। রাজ্য সরকার বন্যা কবলিত এলাকার মানুষদের সমস্যা মেটাতে সবরকম উদ্যোগ নিচ্ছেন। ত্রাণ শিবির তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’