আইএমএ কলকাতা শাখা থেকে পদত্যাগ করলেন সহ–সভাপতি, নেপথ্যে কারণ কী?‌

আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার রেশ এখনও কেউ ভুলতে পারেননি। ওখানে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল। যার জেরে তুমুল আন্দোলন হয়েছিল রাজ্য জুড়ে। সদ্য উঠেছে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি। আর এই আবহের মধ্যেই ‘নিষ্ক্রিয়’ ছিল সর্বভারতীয় চিকিৎসকদের সংগঠন আইএমএ’‌র কলকাতা শাখা বলে অভিযোগ। নয়াদিল্লি থেকে নির্দেশ আসার আগে কারও বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। এই ঘটনার প্রতিবাদে এবার পদত্যাগ করলেন আইএমএ’‌র কলকাতা শাখার সহ–সভাপতি কৌশিক বিশ্বাস। আইএমএ’‌র কলকাতা শাখার সভাপতিকে ইমেল করে ইস্তফা দিলেন তিনি। রাজ্য শাখাকেও ইমেল করেছেন।

আইএমএ’‌র কলকাতা শাখার সহ–সভাপতি পদত্যাগ করতেই আলোড়ন পড়ে যায়। কারণ পদত্যাগের পর সংবাদমাধ্যমে কৌশিক বিশ্বাস বলেন, ‘আমি আইএমএ’‌র কলকাতা শাখার সহ–সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি। সেটা ইমেল করে সংগঠনের সভাপতিকে পাঠিয়েছি। রাজ্য কমিটিকেও আমার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছি। আরজি কর হাসপাতালে যা ঘটেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে আইএমএ’‌র কলকাতা শাখার ভূমিকা অত্যন্ত হতাশাজনক ছিল। সেটাই আমার পদত্যাগের অন্যতম কারণ। গত দেড় মাসে আইএমএ’‌র কলকাতা শাখা তেমন কোনও পদক্ষেপ করেনি। আমি এটা মেনে নিতে না পেরে সহ–সভাপতি পদ থেকে সরে গেলাম। এই নিষ্ক্রিয়তার দায় আমি এড়াতে পারি না।’

আরও পড়ুন:‌ হস্টেলের মধ্যেই নিয়মিত চার ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ, গ্রেফতার তিনজন

রবিবারই কলকাতা শাখার বৈঠক উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। সেখানে দু’‌পক্ষের মধ্যে তুমুল বচসা হয়েছিল। ইস্যু কিন্তু সেই আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা এবং নিষ্ক্রিয় ভূমিকা। এই ঘটনার পর থেকে সংগঠনের অন্দরের নানা কাজ মেনে নিতে পারছিলেন না বলেও জানিয়েছেন কৌশিক বিশ্বাস। তাঁর অভিযোগ, এখানে দুটি গোষ্ঠী আছে। যে গোষ্ঠী আইএমএ’‌র কলকাতা শাখায় সক্রিয়, তাদের কাজ মেনে নেওয়া যাচ্ছিল না। তাই সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। কৌশিকবাবুর বক্তব্য, ‘এখন আইএমএ’‌র কলকাতা শাখা যে বা যাঁরা চালাচ্ছেন, তাঁরা যে বিশেষ গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত, তাদের সঙ্গে আমি মানিয়ে নিতে পারছিলাম না। অগত্যা পদত্যাগ।’‌

আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষও আইএমএ’‌র কলকাতা শাখার সদস্য ছিলেন। এখন তাঁকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তারপর সন্দীপকে পদ থেকে সরিয়ে দেয় আইএমএ কলকাতা। কৌশিকবাবুর অবশ্য অভিযোগ, সংগঠনের কলকাতা শাখার পক্ষ থেকে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে কোনও পদক্ষেপ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে করা হয়নি। নয়াদিল্লির নির্দেশে সন্দীপকে পদ থেকে সরানো হয়েছিল। কৌশিক বিশ্বাসের কথায়, ‘আমার মত ছিল, নয়াদিল্লির নির্দেশ আসার আগেই সন্দীপকে সরানো হোক। কিন্তু সেটা মানা হয়নি। পরে নয়াদিল্লির আইএমএ থেকে নির্দেশ আসে এবং তা কার্যকর করা হয়।’