বগুড়ায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ, দুই সাংবাদিকসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বগুড়া আন্তজেলা ট্রাক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সংগঠনের সভাপতি-সম্পাদক ও দুই সাংবাদিকসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। সোমবার বগুড়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করেন সংগঠনের সদস্য নিশিন্দারা মধ্যপাড়ার মানিক শেখ।

বিচারক সুকান্ত সাহা শুনানি শেষে আগামী ২৯ অক্টোবরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পিবিআই বগুড়াকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ নিয়ে বগুড়ায় কর্মরত ২১ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হত্যাসহ বিভিন্ন ধারায় বেশ কয়েকটি মামলা করা হলো।

মামলার আসামিরা হলেন বগুড়া আন্তজেলা ট্রাক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল মান্নান মন্ডল, সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান খলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, সদস্য সচিব মো. সোহাগ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, বগুড়া জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর আমিনুল ইসলাম, ফেডারেশনের সিনিয়র সহসভাপতি সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, অবজারভারের বগুড়া জেলা প্রতিনিধি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ এইচ এম আখতারুজ্জামান, আন্তজেলা ট্রাক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক নির্বাচন কমিশনার তৌফিক হাসান ময়না, আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল করিম, বগুড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক গাজী টেলিভিশনের বগুড়া জেলা প্রতিনিধি আমজাদ হোসেন মিন্টু প্রমুখ।

বাদী এজাহারে বলেন, আন্তজেলা ট্রাক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের মাধ্যমে পরিবহন খাত থেকে সদস্যদের মাসিক চাঁদা, টার্মিনাল ফি, শ্রমিক কল্যাণ বাবদ ফি আদায় ও ট্রাকের চালান ফি বাবদ প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা আদায় হয়। তিন বছর পরপর নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও ২০১২-১৩ সালের পর দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর কোনও নির্বাচন করা হয়নি। দীর্ঘদিন পর গত ২৭ এপ্রিল সাধারণ সভায় ১৪ বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব করা হলে অনিয়ম দেখে সাধারণ সদস্যরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। সভা ডাকার অপরাধে সিনিয়র সহসভাপতি রাসেল মন্ডলসহ কয়েকজনকে মারধর করা হয়। আসামি আমিনুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগের কয়েকজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম শাহীন হত্যা মামলাসহ জমি দখল, মাদক বিক্রির মামলা রয়েছে।

আরও বলেন, এসব ব্যাপারে থানায় মামলা করতে গেলে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। আসামিরা আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে সংগঠনের আনুমানিক ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

এদিকে বগুড়া আন্তজেলা ট্রাক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় নেতাদের সঙ্গে দুই সাংবাদিককে জড়ানো নিয়ে অন্য সাংবাদিকদের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। তারা এসব মিথ্যা মামলা থেকে ২১ সাংবাদিকের নাম বাদ দিতে এবং অন্যদের মামলায় সম্পৃক্ত না করতে সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, তথ্য উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পুলিশ প্রধানের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী শফিকুল ইসলাম শফিক জানান, ট্রাক পরিবহনশ্রমিকদের অর্থ আত্মসাতের মামলায় সাংবাদিক এ এইচ এম আখতারুজ্জামান ও আমজাদ হোসেন মিন্টুকে আসামি করার কথা নয়। এরপরও করা হলে তদন্তে তারা বাদ পড়বেন।

পিবিআই বগুড়ার সেকেন্ড অফিসার (পরিদর্শক) জাহিদ হাসান বলেন, অপরাধে জড়িত না থাকলে কোনও মামলার আসামিকে হয়রানি করা হবে না।