Bengal Flood Situation: ক্ষতে প্রলেপ? বাংলার বন্যা ত্রাণে একদিনের বেতন দানের আবেদন ডিভিসির

বাংলার বর্তমান বন্যা পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে সংঘাতের আবহের মধ্যেই কি এবার মানবিক হওয়ার বার্তা দিল ডিভিসি কর্তৃপক্ষ? সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে অন্তত তেমনই আভাস মিলছে।

খবরে প্রকাশ, রাজ্যের বন্যা ত্রাণে ডিভিসির কর্মীদের একদিনের বেতন দান করার আবেদন জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে, এটা আবেদনই, নির্দেশ নয়।

মঙ্গলবার ডিভিসি কর্তৃপক্ষ তাদের কর্মীদের উদ্দেশে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। তাতে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অংশে বর্তমানে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেই কারণে পশ্চিমবঙ্গের বন্যা ত্রাণ তহবিলে প্রত্যেক কর্মী তাঁদের একদিনের বেতন দান করুন।

তবে, কোনও কর্মী যদি মনে করেন, তিনি এই টাকা দেবেন না, তাহলে তিনি তা করতেই পারেন। সেক্ষেত্রে অবশ্য কেন ওই কর্মী এই টাকা দিচ্ছেন না, তা ব্যাখ্যা করে কর্তৃপক্ষকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্য়ে ইমেল করতে হবে। তাহলে তাঁর বেতন থেকে দানের অর্থ হিসাবে কোনও টাকা কাটা হবে না।

উল্লেখ্য, নিম্নচাপের প্রভাবে গত কয়েক দিন ধরেই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অংশে একটানা বৃষ্টি চলছে। তার উপর ডিভিসি কর্তৃপক্ষ তাদের জলাধারগুলি থেকে ক্রমাগত জল ছাড়ার ফলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় সরাসরি এই পরিস্থিতির জন্য ডিভিসি কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন এবং একে ‘ম্যানমেড বন্যা’ বলে অবিহিত করেছেন। এমনকী, রাজ্য বনাম ডিভিসি ও কেন্দ্রের বাকযুদ্ধ এবং চিঠির লড়াইও চলছে।

আর এই সবকিছুর মধ্যে আখেরে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমজনতাকে। তাহলে কি দুর্গত মানুষের সামনে নিজেদের ভাবমূর্তি যাতে নষ্ট না হয়, তার জন্যই বন্যা ত্রাণে বেতন দানের পরিকল্পনা করেছে ডিভিসি?

মানতে নারাজ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ডিভিসির এক প্রতিনিধি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, যখনই দেশের কোথাও কোনও দুর্যোগ ঘটে, তাঁরা এভাবেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।

এদিকে, ইতিমধ্য়েই ডিভিসি কর্তৃপক্ষ তাদের মাইথন এবং পাঞ্চেত বাঁধ থেকে সর্বোচ্চ প্রায় আড়াই লক্ষ কিউসেক হারে জল ছেড়েছে। বুধবারও এই দু’টি জলাধার থেকে ২২ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়।

মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ঝাড়খণ্ডে বেশি বৃষ্টি হলেই কেবলমাত্র নিজেদের বাঁচানোর জন্য ডিভিসি অবিবেচকের মতো জল ছাড়তে শুরু করে। যার ফলে আক্রান্ত হয় বাংলা।

ওয়াকিবহাল মহলের আশঙ্কা, বৃষ্টি যে হারে চলছে, তা যদি বন্ধ না হয়, তাহলে আগামী দিনে আরও জল ছাড়বে ডিভিসি। তাতে রাজ্য়ের বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। তাই কি বন্যা ত্রাণে বেতন দান করে ক্ষতে প্রলেপ দিতে চাইছে তারা?