‘‌মণিপুরের ঘটনার সঙ্গে সন্দেশখালিকে টানবেন না’‌, সুপ্রিম কোর্টে খারিজ সিবিআই তদন্তের দাবি

সন্দেশখালি মামলায় হস্তক্ষেপ করল না সুপ্রিম কোর্ট। সন্দেশখালি কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের দাবি খারিজ করা হয়েছে। সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। মামলাকারীর দাবি ছিল, মণিপুরের মতো নৃশংসতা দেখা গিয়েছে সন্দেশখালিতে। তাই মণিপুরের ধাঁচেই তদন্ত শুরু হোক। আজ, সোমবার এই মামলার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিভি নাগরত্ন ও বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহর বেঞ্চে। আর সুপ্রিম কোর্ট সন্দেশখালির এই মামলা শুনতে রাজি হয়নি বলেই খবর। এমনকী মণিপুরের হিংসার সঙ্গে সন্দেশখালির তুলনা না টানতেও মামলাকারী আইনজীবীকে নির্দেশ দেন বিচারপতিরা। মামলাকারীকে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করার নির্দেশ দিলেন বিচারপতিরা। বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, মণিপুরের সঙ্গে সন্দেশখালির তুলনা হয় না।

এদিকে সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর আবেদনকারী আলাখ অলোক শ্রীবাস্তব মামলা প্রত্যাহার করে নেন। তিনি এবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে চলেছেন। তবে এই আইনজীবীর বক্তব্য ছিল, সন্দেশখালি থেকে ‘ভয়াবহ’ তথ্য উঠে এসেছে। তাতে বাংলায় নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া সম্ভব নয়। ন্যায়বিচারের স্বার্থে মামলা রাজ্যের বাইরে সরিয়ে আনা উচিত। আর সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে সিট বা সিবিআই দিয়ে তদন্ত হওয়া জরুরি। মণিপুর কাণ্ডে যেভাবে সিট গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট এবারও সেভাবেই সন্দেশখালি কাণ্ডের তদন্ত হোক। সন্দেশখালির এই ঘটনাকে মণিপুরের জাতি হিংসার সঙ্গে তুলনাও করেন তিনি।

অন্যদিকে আজ, সোমবার এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি বিভি নাগারত্ন এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহর ডিভিশন বেঞ্চের সব শুনে বিচারপতিদের বক্তব্য, কলকাতা হাইকোর্ট ইতিমধ্যেই একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। কী প্রক্রিয়ায় তদন্ত করা হবে, তারা সেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা তো কলকাতা হাইকোর্টের রয়েছে। তাই মামলাকারী সেখানেই মামলা করতে পারতেন। এই ঘটনার সঙ্গে মণিপুরের ঘটনার তুলনা করা যায় না। পরে বিচারপতিদের নির্দেশ মেনে মামলাটি প্রত্যাহারও করেন মামলাকারী।

আরও পড়ুন:‌ মৎস্যজীবীরা জুনপুট উপকূল থানা ঘেরাও করেন, ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্রের বিকট শব্দে আতঙ্ক

তাছাড়া এই মামলার শুনানির সময় আইনজীবীর কথা শুনে রেগে যান বিচারপতিরা। কারণ সন্দেশখালির ঘটনার সঙ্গে মণিপুরের ঘটনার তুলনা টানতেই রেগে যান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা। আর তাই আইনজীবীর মন্তব্যে রেগে গিয়েই বিচারপতি বিভি নাগরত্ন বলেন, ‘‌মণিপুরের ঘটনার সঙ্গে সন্দেশখালিকে টানবেন না। মণিপুরে কী হয়েছে সেটা গোটা দেশ জানে। আপনার যা যা দাবি তা কলকাতা হাইকোর্টে জানান। বিশেষ সিবিআই বা সিট গঠনের অধিকার কলকাতা হাইকোর্টেরও রয়েছে।’‌ তবে এই সন্দেশখালিতে যাঁদের উপর যৌন নির্যাতন হয়েছে বলে অভিযোগ, তাঁদের ক্ষতিপূরণ এবং এলাকায় আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করার দাবি জানানো হয়েছে। তবে আজ সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বিরোধীদের সব অভিযোগ নস্যাৎ হয়ে গিয়ে মুখ পুড়ল তাঁদের।