ভিক্টোরিয়া জুটমিল বন্ধ হয়ে গেল, নির্বাচনের মুখে বিপদে পড়লেন ২৮০০ শ্রমিক

লোকসভা নির্বাচনের মুখে ভদ্রেশ্বরের ভিক্টোরিয়া জুট মিলে সাময়িক ‘সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক’ নোটিশ পড়ল। শনিবার এই নোটিশ ঝুলিয়ে দেন জুটমিল কর্তৃপক্ষ। আর তার জেরে মিলের অন্তত ২৮০০ শ্রমিকের রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে গেল। সুতরাং সেখানে হাহাকার শুরু হয়েছে। তবে এই জুটমিল বন্ধের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ জেলা শ্রম দফতরকে কিছুই জানায়নি বলে সূত্রের খবর। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। আজ, রবিবার অনেকের বাড়িতে বাজার হয়নি। নতুন কাজ খুঁজতে বেরিয়ে পড়েছেন অনেকে।

কদিন ধরেই এখানে একটা অচলাবস্থার পরিবেশ তৈরি করে জুটমিল কর্তৃপক্ষ বলে অভিযোগ শ্রমিকদের। তারপর হঠাৎ শনিবার এই চালু চটকল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই মাসের বেতন হাতে আছে। কিন্তু মে মাস থেকে রোজগার থাকবে কিনা তা কেউ জানেন না। সুতরাং জীবন–জীবিকা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে পড়ে গিয়েছে। এই বিষয়ে ভদ্রেশ্বরের উপ–পুরপ্রধান ফিরোজ খান বলেন, ‘শ্রম দফতরে জুটমিল কর্তৃপক্ষ কিছুই জানাননি। এটা ঠিক কাজ নয়। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি কাজ। জুটমিলে নতুন মেশিন নিয়ে একটা সমস্যা হয়েছিল। যা কর্তৃপক্ষ ১৫ তারিখের পরে বৈঠকে বসবেন বলে জানান।’‌

আরও পড়ুন:‌ ‘‌বগটুই নিয়ে তো কোনও প্রতিক্রিয়া নেই’‌, মমতাকে শীতলকুচির পাল্টা আক্রমণ দেবাশিসের

এদিকে রাজ্যের প্রায় সব জুট মিলে এখন আধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্র বসানো হচ্ছে। রাজ্য সরকার এবং শ্রম দফতর এই বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে। সব পক্ষকে নিয়ে রাজ্য স্তরে একটি কমিটি গড়ে দেওয়া হয়েছে। এই কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২৫ থেকে ৪০ বছর বয়সের কর্মীদের নতুন প্রযুক্তিতে কাজ করতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। সেখানে হঠাৎ এই জুটমিল বন্ধ করে দেওয়ার কারণ শ্রমিকরা বুঝতে পারছেন না। কবে খুলবে?‌ তাও কেউ জানেন না। জুটমিল কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। কদিন আগে নর্থ শ্যামনগর জুটমিলে নতুন প্রযুক্তির যন্ত্র নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। তার জেরে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। লোকসভা নির্বাচনের মুখে এবার একই সমস্যা দেখা দিল ভিক্টোরিয়া জুটমিলে।

অন্যদিকে শ্রমিকরা আন্দোলনে নামার কথা ভাবছেন। তবে ভিক্টোরিয়া জুটমিলের পার্সোনেল ম্যানেজার প্রদীপকুমার রাউত বলেন, ‘আমাদের মিলে ২০১৬ সাল থেকে নতুন যন্ত্রেই শ্রমিকরা কাজ করছেন। তবে দু’বছর ধরে শ্রমিকদের একটি অংশ উৎপাদনে মন দিচ্ছে না। আমরা বারবার ওঁদের বুঝিয়েছি। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। শ্রমিকদের এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে স্থানান্তর মানছেন না। এভাবে কতদিন আর কাজ চালানো সম্ভব।’‌ আর তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি’‌র হুগলি–শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। অনুরোধ করেছি, যত দ্রুত সম্ভব মিলের দরজা খুলে দেওয়ার জন্য।’