Migrant worker’s son 9th in HS: HS-এ নবম পরিযায়ী শ্রমিকের ছেলে, সুস্থ সমাজ গড়ে তোলাই লক্ষ্য, হতে চান IAS

বাবা পরিযায়ী শ্রমিক। মা অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করেন। অভাব অনটনের সংসারেও উচ্চ মাধ্যমিকে দুর্দান্ত ফল করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিলেন কালিয়াগঞ্জের প্রত্যন্ত গ্রাম ভেউরের বাসিন্দা প্রীতম্বর বর্মন। উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় নবম স্থানে জায়গা করে নিয়েছেন প্রত্যন্ত গ্রামের এই পড়ুয়া। তার মোট প্রাপ্ত নম্বর হল ৪৮৮, অর্থাৎ ৯৭.৬ শতাংশ। এমন অভাবের সংসারে নবম স্থান দখল করায় কার্যত বিশ্বাসে করতে পারেননি পরিবারের সদস্যরা। তবে এই সাফল্যে স্বাভাবিকভাবেই খুশি প্রীতম্বরের বাবা-মা থেকে শুরু করে পরিবারের প্রত্যেকেই। 

আরও পড়ুন: মাধ্যমিকের পর HS-এও দশম হলেন তমলুকের তন্নিষ্ঠা, স্বপ্ন ইঞ্জিনিয়ার হওয়া

প্রীতম্বর বর্মন কালিয়াগঞ্জ তরঙ্গপুর নন্দ কুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের কলা বিভাগের ছাত্র। বাবা উত্তম বর্মন পেশায় রাজমিস্ত্রি। তিনি নেপালে কাজ করেন। বছরে এক দু বার বাড়ি আসেন। তাই পরিবারের যাবতীয় দায়িত্ব প্রীতম্বরের মায়ের কাঁধে। বলতে গেলে দুস্থ পরিবারের সন্তান প্রীতম্বর বর্মন। বড় হয়ে প্রীতম্বর একজন আইএএস অফিসার হতে চান। 

প্রীতম্বর বর্মন জানান, তাঁর পরিশ্রম সার্থক হল। তবে সারা বছর ধরে তিনি সেভাবে পড়াশোনা করেননি। পরীক্ষার দেড় থেকে দুমাস আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন। প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ ঘণ্টা করে পড়াশোনা করেছেন। তিনি জানান, স্কুলের শিক্ষকরা তাঁকে সবরকমভাবে সাহায্য করেছিলেন। তিনি নিজেও ব্যাপক পরিশ্রম করেছেন। তাঁর কথায়, ‘আমার পরিশ্রম সার্থক হল।’ 

পড়ুয়া জানান, বই থেকে শুরু করে সমস্ত ক্ষেত্রে শিক্ষকেরা তাঁকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছিলেন। পড়াশোনার জন্য কোনওকিছু প্রয়োজন হলেই শিক্ষকেরা সাহায্য করতেন। স্কুলের লাইব্রেরি থেকে বই নিয়ে পড়াশোনা করেছেন প্রীতম্বর। ৪ জন গৃহশিক্ষকের কাছে তিনি পড়েছেন।

এখন উচ্চ মাধ্যমিকে সফল হওয়ার পর প্রীতম্বরের লক্ষ্য হল একজন আইএএস অফিসার হওয়া। তিনি বলেন, ‘সুস্থ সমাজ গড়ার পিছনে ভূমিকা পালন করতে আগামী দিনে ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসার ইচ্ছা রয়েছে। আমি একজন আইপিএস অফিসার হতে চাই।

ছেলে এত ভালো ফল করায় স্বাভাবিকভাবে খুশিতে কেঁদে ফেলেন প্রীতম্বরের মা তরুলতা বর্মন। অশ্রু ভেজা চোখে তিনি বলেন, ‘খুব খুশি হয়েছি। প্রচন্ড ভালো লাগছে। আমি ছেলেদের বলতাম কষ্ট করে পড়াচ্ছি ভালো করে পড়, যাতে তার মূল্যটা আমরা পাই। আমাদের নাম থাকে। আমি সবসময় ওদের জন্য পরিশ্রম করি। অন্যের ক্ষেতে দিনমজুরের কাজ করি। আবার যখন ওদের দরকার হয় তখন কাজকর্ম ছেড়ে দিয়ে ওদের সঙ্গে যাই।’