অভিষেকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সৌমিত্র, প্রশংসায় ভরালেন সুজাতাকেও,তুললেন সেটিং তত্ত্ব

লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরদিন সকালেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের জয়ী বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডলেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। ওদিকে নিজের দলের রাজ্য নেতৃত্বের সমালোচনায় মুখর হন সৌমিত্র। এমনকী বুথ থেকে রাজ্য স্তর পর্যন্ত বিজেপি নেতাদের একাংশ তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। স্বীকার করেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের সম্পূর্ণ ফায়দা পেয়েছে তৃণমূল।

আরও পড়ুন – লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশ হতেই সন্দেশখালি নিয়ে মুখ খুললেন মমতা, বললেন…

পড়তে থাকুন – কেউ যদি মনে করে থাকেন এই ফলে দুর্নীতি করার লাইসেন্স পেয়ে গেলেন, ভুল করছেন: শমীক

সৌমিত্র খাঁ বলেন, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একটা সিস্টেম বানিয়েছে। যেটা রাজ্যের অনেক বড় বড় নেতা ধরতে পারেনি। যেটা আমি বুঝতে পেরেছিলাম। আসলে আমাদের মনের জোরটা দেখছিল। কতটা মনের জোর রাখতে পারি। ওরা প্রতিটা লোকসভায় ২টো করে বিধানসভায় জোর দিয়েছিল। সেটা আমি ধরে ফেলেছি। আমাদের এখানে কোতুলপুর আর ইঁদাস ওদের লক্ষ্য ছিল। কোতুলপুরটা পুরোটা সামলালেও ইঁদাসটা পুরোটা সামলাতে পারলাম না।’

সৌমিত্রর দাবি, ‘রথী – মহারথীরা হেরে গেলেন এই জন্য যে তারা গণনায় মনোযোগ দেননি। যেদিন ভোটগ্রহণ হয়েছে সেদিন থেকে তারা ওই গেছেন, রাজার মতো ঘুরেছেন, চলে এসেছেন। তাই বিজেপির এই পতন। নইলে আরও ৪ – ৫টা সিট হত।’

দলীয় নেতাদের একাংশের সঙ্গে তৃণমূলের যোগাযোগ রয়েছে বলে দাবি করে সৌমিত্র বলেন, ‘আমাদের অনেক নেতাদের সঙ্গে তৃণমূলের একটা গঠনমূলক সম্পর্ক তৈরি হয়ে গেছিল। আরামবাগ সিট আমরা হারি না। অনেক সিট আমরা হারি না। অঞ্চল থেকে রাজ্য স্তর পর্যন্ত আমার অনেক নেতাদের সঙ্গে তৃণমূলের একটা সেটিং হয়ে গেছিল। তাছাড়া এই ফল হতে পারে না।’

ফের একবার রাজ্য নেতৃত্বের দিকে আঙুল তুলে সৌমিত্র খাঁ বলেন, ‘রাজনীতিতে যারা জেতেনি তারা রাজ্য চালাবে এটা হয় না। রাজ্য চালাবে যারা জিতে আসে তারা। অহঙ্কার ত্যাগ করতে হবে। সাংসদ হয়ে বিজেপির অনেকের অহঙ্কার হয়ে গিয়েছিল। আমি তৃণমূলে থাকলে বিষ্ণপুরে দেড় লাখে জিততাম। জেলা স্তর থেকে মহিলা নেতৃত্ব তুলে আনতে হবে। বুঝতে হবে যে আমার সঙ্গে মাইনরিটি ভোট নেই। মহিলা, মাইনরিটি, অফিশিয়াল ও পুলিশ সব মিলিয়ে একটা টিম বানাতে হবে। অভিষেক ভালো কাজ করেছে এটাতে। এইজন্য জিতেছে। শুভেন্দুদা পরিশ্রম করলেও সাফল্য পাননি। কারণ উনি টিম তৈরি করতে পারেননি।’

আরও পড়ুন – মুসলিমরা চাকরি, পরিশ্রুত পানীয় জল, হাসপাতাল চান না, তারা চান শুধু তোষণ: শুভেন্দু

প্রতিপক্ষ সুজাতা মণ্ডলের প্রশংসা করে সৌমিত্র খাঁ বলেন, ‘সুজাতা লড়াইটা দারুন লড়েছে। সুজাতাকে দেখে মহিলারা ভোট দিয়েছেন।’

লোকসভা ভোটের ফলে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের প্রভাব মেনে নিয়ে সৌমিত্র খাঁ বলেন, ‘১০০ শতাংশ প্রভাব ফেলেছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। মানতেই হবে। আমার অনেক কর্মীদের স্ত্রীরাও একসঙ্গে দলে দলে গিয়েছে। কিন্তু ভোট দিয়েছে তৃণমূলকে। এটা আমরা বুঝতে পেরেছিলাম ভোটের ৩ – ৪ দিন আগে।’