Putiram Closing: প্রাণহরা, সরভাজার দিন হয়তো শেষ! বাঙালির প্রিয় মিষ্টির দোকান পুঁটিরাম নাকি বন্ধ হচ্ছে

ধীরে ধীরে ঘুমিয়ে পড়ছে পুরনো কলকাতা। নতুন প্রজন্ম তো চাকরি করতে চায়, ব্যবসা নয়। বয়স জ্যেষ্ঠরা আর কতদিন টানবেন দোকানগুলো। হ্যারিকেনের নিভতে বসা আলোর মতো তাই হাল হয়েছে পুরনো কলকাতার দোকানগুলো। এবার সেই একই পথে হাঁটছে পুঁটিরামও।

বাঙালির মিষ্টিপ্রেমের একটা পিলার পড়ল বলে। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সাধের পুঁটিরাম। প্রাণহরা, সরভাজা, সরপুরিয়ার মত অনবদ‌্য স্বাদের সব মিষ্টি আর চেখে দেখা সম্ভব হবে না। ৪৬/৪ মহাত্মা গান্ধী রোডে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকা পুরনো এই মিষ্টির দোকানের ইতি বোধ হয় এখানেই। বেশ কয়েকদিন ধরেই বন্ধ রয়েছে দোকান। পথ চলতি মানুষের জিজ্ঞাসা, আর কি খুলবে না মিষ্টির দোকানটা। উত্তর এসেছে এবার। জানা গিয়েছে, একেবারেই বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে পুঁটিরামের মিষ্টির দোকান।

কেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে পুঁটিরাম

দীর্ঘ অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকা, এই ঐতিহ্যবাহী মিষ্টির দোকানটি বন্ধ করে দেওয়ার কারণটি কী। কী এমন হয়েছে। জিজ্ঞাসা চিহ্ন ভুড়ি ভুড়ি। স্বাভাবিক, ৮০ বছরের পুরনো এই মিষ্টির দোকানখানা। অফিস থেকে যাওয়া আসার পথে অনেকেই খেতে ঢুকে পড়েন দোকানে। ট্যাঁক থেকে বড় নোট বের করে অনেকেই বাক্স গুছিয়ে বাড়িতেও নিয়ে যান। পরিবারের ভারী পছন্দের পুঁটিরামের মিষ্টি। সেলও যারপরনাই মন্দ নয়, তাহলে? জানা গিয়েছে, গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন পুঁটিরামের মালিক, পরেশ মোদক। আমহার্স্ট স্ট্রিটের পুঁটিরামের মালিক পরেশ মোদক এখন খুবই অসুস্থ। ছেলে একটাই। মুম্বইয়ের বাসিন্দা। দোকান দেখাশোনা তিনি আর কেই বা করবেন। অনেকটা ওই বাংলা সিনেমার গল্পের মতোই, একাকী পরেশ বাবু একপ্রকার বাধ্য হয়েই পুঁটিরামে ইতি টানছেন।

আরও পড়ুন: (Plastic Neutral Delivery on Zomato: আর প্লাস্টিকের পাত্র না, গ্রাহকদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে বড় সিদ্ধান্ত নিল Zomato)

তবে, হ্যাঁ আমহার্স্ট স্ট্রিটের পুঁটিরামের স্বাদ না পেলেও, আমরা কিন্তু মহাত্মা গান্ধী রোড ধরে হেঁটে যেতে পারি সোজা কলেজ স্ট্রিটের দিকে। সে চত্বরেই যে রয়েছে আরও এক পুঁটিরাম। সূর্য সেন স্ট্রিটের এই পুঁটিরাম আবার আমহার্স্ট স্ট্রিটের পুঁটিরামের থেকে পুরো ২০ বছরের বড়। ১০০ বছরের পুরনো পুঁটিরাম বন্ধের কোনও পরিকল্পনা তাই একেবারেই নেই। কারণ দুই দোকানের মালিক আলাদা। জীতেন্দ্রনাথ মোদক কলেজ স্ট্রিটের দোকানের মালিক। আমহার্স্ট স্ট্রিটের দোকানটা তো মেয়ে জামাইয়ের। তাই দুই দোকানের ব্যবসাও চলে আলাদা আলাদা। তাঁদের কারখানাটিও একে অপরের মুখ দেখে না। তাহলে, এক্ষেত্রে কিছুটা হলেও স্বস্তি যে এক পুঁটিরাম বন্ধ হলেও, অন্য দোকানটি এখনও একইভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে মিষ্টিপ্রেমী ক্রেতার অপেক্ষা করছে।