ডিএ আন্দোলন মঞ্চে এখন ভাঁটার স্রোত, ‘‌কেন আন্দোলন করছেন জানি না’‌, মন্তব্য মন্ত্রীর

আজ, সোমবার ঘড়িতে তখন দুপুর ১টা বাজে। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চে হাতে গোনা কটা লোক রয়েছে। গা এলিয়ে পড়ে রয়েছেন তাঁরা। খুব বেশি হলে পাঁচজন আছেন। কেন্দ্রীয় হারে ডিএ’‌র দাবিতে আন্দোলন করছেন সরকারি কর্মীরা। এই দৃশ্যই বুঝিয়ে দিল এবার ঝাঁঝ কমছে। আজকের দিন ধরলে ৫৫০ দিনে পা দিয়েছে আন্দোলন। কিন্তু উপস্থিতি নগণ্য। আগে এমন ছবি দেখা যায়নি। তবে এই আন্দোলন চলাকালীন খেপে খেপে ডিএ বা মহার্ঘভাতা রাজ্য সরকার দিয়ে চলেছেন। তাতে আন্দোলনে ফাটল ধরেছে বলে সূত্রের খবর।

এই ডিএ বা মহার্ঘভাতার দাবিতে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। কিন্তু মামলা বারবার পিছিয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় হারে ডিএ’‌র দাবিতে শহিদ মিনারের সামনে আন্দোলন শুরু করেছিলেন সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। এই আবহে ২০২৩ সালে বড়দিনের আগে ৪ শতাংশ এবং রাজ্য বাজেটে আরও ৪ শতাংশ, মোট ৮ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই হারে বেতনও ঢুকতে শুরু করেছে। আর এই মাসের বেতনে ঢুকবে ইনক্রিমেন্টের টাকাও। সব মিলিয়ে খুশি রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একটি বড় অংশ। তাই আন্দোলন আগের মতো আর নেই।

আরও পড়ুন:‌ ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে কাজ এগোচ্ছে’‌, লোকসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে বড় দাবি করলেন দেব

সংগ্রামী যৌথ মঞ্চে বহু রাজনৈতিক নেতা এসে সুর চড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। কারণ মহার্ঘভাতা বা ডিএ ধীরে ধীরে দিয়ে চলেছে রাজ্য সরকার। তাই আন্দোলন বড় আকার নিতে পারেনি। এখানে এসেছিল একাধিক বিজেপি নেতা। এখন আর কেউ আসে না। কারণ নির্বাচন মিটে গিয়েছে। নির্বাচনে ফায়দা তোলার জন্য অনেকে এসে ছিলেন বলে খবর। এই নিয়ে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, ‘আজ অফিস থাকে। অবসরপ্রাপ্তরাই মঞ্চে থাকেন। আন্দোলনকারীদের একাংশ একটি কাজে গিয়েছিলেন। দেড় বছর ধরে আন্দোলন চলছে।’‌

পরিস্থিতি এখন পাল্টে গিয়েছে। কারণ রাজ্য সরকারের বিপুল পরিমাণ টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র বলে অভিযোগ। এটা অনেকে বুঝতে শুরু করেছেন। তাই এখন আর মঞ্চের দিকে পা বাড়ান না। রাজ্যের মন্ত্রীরা ইতিমধ্যেই বলেছেন কেন্দ্র বকেয়া টাকা মেটালেই আগে ডিএ দিয়ে দেওয়া হবে। রাজ্য সরকারি কর্মচারি পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীলের বক্তব্য, ‘‌সুপ্রিম কোর্টে মামলা দীর্ঘদিন চলছে। ফলে সরকারি কর্মীদের মধ্যে একটা হতাশা তৈরি হয়েছে।’‌ রাজ্য সরকারি কর্মী ফেডারেশনের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভুঁইয়া বলেন, ‘‌বারবার আমরা বলেছিলাম ছায়া যুদ্ধ করবেন না। মুখ্যমন্ত্রী আবেদন করেছেন, আমি আবেদন করেছি। আমি আবারও বলব, যাঁরা আন্দোলন করছেন তাঁরা রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট। ১ লাখ ৭১ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রের বিজেপি সরকার দেয়নি। কেন্দ্রীয় সরকার টাকা ছাড়লেই আমরা সরকারি কর্মীদের দাবি নিয়ে ভাবব। তার পরেও কেন আন্দোলন করছেন জানি না।’