চট্টগ্রামের বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে কমেছে দর্শনার্থী

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার ফলে চট্টগ্রামের বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে কমেছে দর্শনার্থী। গত ১৬ জুলাই থেকে দর্শনার্থী কমতে শুরু করেছিল। এরপর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও অনেকে আতঙ্কে বিনোদনকেন্দ্র থেকে দূরে রয়েছেন। পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন সবাই।

জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত চিড়িয়াখানায় উল্লেখযোগ্যহারে দর্শনার্থী কমেছে। এখানে টিকিট নিয়ে দর্শনার্থীদের ভেতরে প্রবেশ করতে হয়। প্রতিটি টিকিটের মূল্য ৭০ টাকা। 

দর্শনার্থী কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে সহিংস পরিস্থিতিকে দায়ী করছেন চিড়িয়াখানার চিকিৎসক ও ডেপুটি কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘চলমান সহিংস পরিস্থিতির কারণে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীর সংখ্যা অনেক কমে গেছে। গত ১৬ জুলাই থেকে দর্শনার্থী কমতে শুরু করেছিল। এর মধ্যে দিনের বেলায় যখন কারফিউ চলমান ছিল, তখন চিড়িয়াখানা পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছিল।’

আগে স্বাভাবিক সময়ে দৈনিক এক হাজার ৮০০ দর্শনার্থী চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করতো উল্লেখ করে শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘সর্বশেষ বুধবার (৩১ জুলাই) সারাদিনে দর্শনার্থী প্রবেশ করেছেন ৬০৬ জন। আশা করছি, দেশের পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হলে আবারও আগের মতো দর্শনার্থীরা চিড়িয়াখানায় আসবেন।’

একইভাবে দর্শনার্থী কমেছে ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক এবং সি-ওয়ার্ল্ডে। আগে এই বিনোদনকেন্দ্রে দৈনিক ৭০০-৮০০ দর্শনার্থী আসতেন। বর্তমানে আসছেন ২০-২৫ জন।

ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্কের ডেপুটি ম্যানেজার বিশ্বজিৎ ঘোষ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কোটা সংস্কার নিয়ে সহিংসতা শুরুর পর থেকে দর্শনার্থী কমেছে। এর মধ্যে দিনের বেলায় যখন কারফিউ ছিল সেসময় বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ ছিল। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পর খোলা হলেও দর্শনার্থী নেই বললেই চলে। প্রতিদিন ২০-২৫ জন করে আসছেন। অথচ এই বিনোদনকেন্দ্র দেখাশোনার জন্য বিপুল সংখ্যক কর্মচারী কাজ করছেন। দর্শনার্থী কমে যাওয়ায় কর্মচারীদের বেতন দেওয়া তো দূরের কথা নাশতার টাকাও উঠছে না। আমরা আশায় আছি, পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে। তখন আবারও দর্শনার্থীর ভিড় বাড়বে।’

দর্শনার্থী কমেছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রসৈকত পতেঙ্গা সি-বিচে। স্বাভাবিক সময়ে যেখানে ৩০-৪০ হাজার দর্শনার্থী যেখা যেতো সেখানে এখন এক হাজারে নেমেছে। দর্শনার্থী কমে যাওয়ায় বেচাকেনা নেই সৈকতের পাড়ঘেঁষে গড়ে উঠা চার শতাধিক দোকানে। ফলে  কোনোমতে দিনাতিপাত করছেন দোকানিরা।

পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত এলাকায় দায়িত্বরত ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. ইস্রাফিল মজুমদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে উল্লেখযোগ্যহারে দর্শনার্থী কমেছে। স্বাভাবিক সময়ে এখানে প্রতিদিন ৩০-৪০ হাজার মানুষ আসতেন। শুক্রবারে তা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যেতো। গত ঈদের সময়ে লাখো দর্শনার্থী ছিলেন। কিন্তু কোটা আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা শুরুর পর কমে গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারও দর্শনার্থী বাড়বে বলে আশা করছি আমরা।’