কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাহফুজুল হক চৌধুরীকে ফুল দিয়ে বরণ করে নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীদের আহ্বানে ওসি আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত থানা এবং তার বাসভবন পরিদর্শন করতে এলে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা দাবি আদায়ের আন্দোলনের সময় কুষ্টিয়া মডেল থানা ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এতে থানা, সার্কেল অফিস ও ওসির বাসভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। এরপর ৭ আগস্ট দিনব্যাপী সাধারণ শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা থানা চত্বর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে পুলিশকে পুনরায় থানায় এসে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনার আহ্বান জানান। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে শুক্রবার ওসি থানা পরিদর্শনে আসেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা সুজন মাহমুদ, সাব্বির হোসেন, তুহিন হোসেন, রাইসুল আহমেদ, সাঈদ আহমেদ শ্রেষ্ঠ, রাফিউল ইসলাম রোজ, আবদুল কাদের মুন্না, মোস্তাফিজুর রহমান, ফরিদ হোসেন, আবু সাঈদ, সাজেদুর রহমান বিপুল, আলমাজ হোসেন মামুন, চাঁদ প্রামাণিক, আক্তারুজ্জামান চন্টুসহ অনেক শিক্ষার্থী।
এ সময় উপস্থিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক তৌকির আহমেদ বলেন, ‘পুলিশ আমাদের পরম বন্ধু। এই ধ্বংসযজ্ঞ কোনও কিশোর গ্যাংয়ের কাজ হতে পারে। এমন ধ্বংসযজ্ঞ চালালে সাধারণ মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত থাকবে। আমরা কোটা সংস্কার থেকে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন এ জন্য করিনি। গত ১৫ বছরে সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগের কাছে জিম্মিদশায় ছিল। এই আন্দোলনের মাধ্যমে তারা কিন্তু বাক স্বাধীনতা পেয়েছে। এরপর আর অন্য কোনও দল এই জিম্মিদশা সৃষ্টি করতে পারবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘৫ আগস্ট আন্দোলন চলাকালে তৃতীয় কোনও পক্ষ থানা, সার্কেল অফিস ও ওসির বাসভবন ভাঙচুর করেছে এবং পুড়িয়ে দিয়েছে। ফলে অস্ত্র, গোলাবারুদ, আসবাবসহ সরকারি নথিপত্র পুড়ে গেছে। সেনাবাহিনীর পাশাপাশি যদি পুলিশও মাঠে থাকতো তাহলে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা থাকতো। আমরা পুলিশদের পুনরায় থানায় ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছি। নতুন করে বরণ করে নিয়েছি।’
কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মাহফুজুল হক চৌধুরী বলেন, ‘পুলিশ জনগণের বন্ধু। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কুষ্টিয়া মডেল থানা, সার্কেল অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। মূলত এর পর থেকেই পুলিশ কর্মবিরতি ঘোষণা করে। বর্তমানে সব জায়গায় এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তৃতীয় পক্ষ হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট শুরু করেছে।’
ওসি আরও বলেন, ‘আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সমন্বয়করা আমাদের পুনরায় থানা পরিচালনা করে আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন। এই মুহূর্তে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ দাবি আদায়ের আন্দোলন চলছে। সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনা পেলে আমরা আবারও থানায় ফিরে আসবো।’