শিবের মাথায় জল ঢালতে গিয়ে পড়শি রাজ্য বিহারের জেহানাবাদ জেলায় ভানাভার পাহাড়ে অবস্থিত সিদ্ধিনাথ মন্দিরে ভিরের জেরে পদপিষ্ট হয়ে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই শিবের মাথায় জল ঢালতে গিয়ে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মৃত্যু হল ৭ পুণ্যার্থীর। ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি সংলগ্ন বাগডোগরার মুনি চা বাগান সংলগ্ন হাওদিজোত এলাকায়। নিহতদের মধ্যে একজন সিভিক ভলেন্টিয়ারও রয়েছেন। মৃতদের বয়স ২০ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে। এদের মধ্যে এক জন সিকিমের বাসিন্দা। তার পরিচয় জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। এছাড়াও, আহত হয়েছেন আরও দুজন। এমন মর্মান্তিক ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে এলাকায়। দুঃখপ্রকাশ করেছেন দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা।
আরও পড়ুন: বাবার মাথায় জল ঢালতে গিয়ে বিহারে পদপিষ্ট হয়ে মৃত ৭ ভক্ত, মর্মান্তিক ঘটনা শ্রাবণের চতু্র্থ সোমে
পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার গোকুলজোত গ্রাম থেকে বাগডোগরার জংলি বাবার মন্দিরে শিবের মাথায় জল ঢালার উদ্দেশ্যে পুণ্যার্থীরা ভোরে বেরিয়েছিলেন। সেই সময় মুনি চা বাগান এলাকায় বাবাধাম থেকে আগত সিকিম নম্বর প্লেটের একটি চার চাকার গাড়ি তীব্র গতিতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পিছন থেকে একের পর এক পুণ্যার্থীদের ধাক্কা মারে। এরপরে গাড়িটিও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যায়। তারফলে ঘটনাস্থলেই পাঁচ জনের মৃত্যু হয়। তবে দুর্ঘটনার পরেও স্থানীয়রা সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি বলে অভিযোগ। সকলেই ভিডিয়ো করতে ব্যস্ত ছিল। তখন পুণ্যার্থীরাই হতাহতদের উদ্ধার করে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে আরও দু’জনের মৃত্যু হয় ।
দুর্ঘটনায় মৃতদের নাম হল বাগডোগরার তারবান্ধার বাসিন্দা সিভিক ভলান্টিয়ার প্রহ্লাদ রায়, গোকুলজোতের বাসিন্দা গোবিন্দ সিংঘ (২২), অমলেশ চৌধুরী ( ২০), কনক বর্মন (২২), প্রণব রায় ( ২৮), পদকান্ত রায়ের। পাশাপাশি মৃত্যু হয়েছে সিকিমের বাসিন্দার। তার নাম ও পরিচয় জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। আহত দুজনের চিকিৎসা চলছে। এক পুণ্যার্থী বলেন, ‘আমরা রাস্তার এক সাইড দিয়েই লাইন দিয়ে যাচ্ছিলাম। সেই ওই গাড়িটি এসে আমাদের ধাক্কা মারে। আমার ছেলে কনক বর্মনও মারা গিয়েছে। যার কাছে যায় দেখি সেই মৃত।’
এদিকে, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি রোমা রেশমি এক্কা। তিনি নিহত ও আহত পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ‘এটা খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। যাদের মৃত্যু হয়েছে তারা সকলেই অল্প বয়সি। খুব খারাপ লাগছে। হাসপাতালের তরফে আহতদের চিকিৎসা করা হয়েছে। মৃতদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তবে আমরা নিহতদের পরিবারের পাশে আছি।’ ঘাতক গাড়িটি সিকিমের বলে তিনি জানান।