আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় নির্যাতিতার নামপ্রকাশ, মুখ্যমন্ত্রীকে খুনের হুমকি, গ্রেফতার যুবক

আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে রাজ্যজুড়ে পথে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এখন এই নারকীয় ঘটনার বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেস শহর থেকে জেলায় সর্বত্র অপরাধীর শাস্তির দাবিতে লাগাতার আন্দোলন করে হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই আবহে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় তাঁরর নাম ও ছবি প্রকাশ এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে তালতলা থেকে একজনকে গ্রেফতার করা হল। এই ঘটনায় এখন আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।

এই ঘটনার পর গর্জে উঠেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি ‘‌এনকাউন্টার’‌ করার নিদান দিয়েছিলেন তিনি। তারপর যখন আরজি কর হাসপাতাল ভাঙচুর হয় তখন এক্স হ্যান্ডেলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। আর কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে ফোন করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন। এটা দেখে বাংলার জনগণ সাধুবাদ জানিয়েছেন। কিন্তু ওই যুবকের ইনস্টাগ্রাম পোস্টের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। আজ, সোমবার তাকে গ্রেফতার করেছে তালতলা থানার পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রীকে খুনের হুমকি গুরুতর অভিযোগ। তাছাড়া গুজব ছড়াতে এবং নির্যাতিতার নাম–ছবি প্রকাশ করতে নিষেধ করেছিল কলকাতা পুলিশ। তাও মানেনি ওই যুবক।

‌আরও পড়ুন:‌ ‘‌মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে ধরনায় বসছি আমরা’‌, আরজি কর ইস্যুতে সুকান্তর প্রতিবাদ

এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে রাস্তায় নেমেছিলেন। দোষীর ফাঁসি চাই স্লোগান তুলেছিলেন। এবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে খুনের হুমকি দেওয়ায় বিষয়টি সহজভাবে নেয়নি লালবাজার। পুলিশ সূত্রে খবর, ইনস্টাগ্রামে ‘কীর্তিসোশ্যাল’ নামের একটি হ্যান্ডল থেকে আরজি কর নিয়ে নানা পোস্ট করে অভিযুক্ত। তিনটি পোস্টে নির্যাতিতার নাম এবং ছবি প্রকাশ করা হয়। ওই পোস্টগুলি যথেষ্ট আপত্তিকর ছিল। আরও দু’টি পোস্টের জেরে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয় থানায়। ওই দুই পোস্টে মুখ্যমন্ত্রীকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছিল। গ্রেফতার হওয়া ওই যুবককে জেরা করছে পুলিশ।

যদিও পাঁচদিন হয়ে গেলেও সিবিআই তদন্ত এখন প্রশ্নের মুখে। কারণ কোনও গ্রেফতার হয়নি। বড় কোনও তথ্যপ্রমাণও সামনে নিয়ে আসতে পারেনি তদন্তকারীরা। এতে এখন পরিস্থিতি জটিল হতে পারে। নির্যাতিতার নাম এবং ছবি প্রকাশ করা নিয়ে কলকাতা পুলিশ প্রথম থেকেই আপত্তি জানিয়েছে। পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল সাংবাদিক বৈঠক করে আরজি কর হাসপাতালের বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিত্তিহীন পোস্ট না করার অনুরোধ করেছিলেন। নির্যাতিতার নাম–ছবি প্রকাশ করলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানিয়েছিলেন। যাঁরা এই কাজ করেছেন তাঁরা নোটিশ পেয়েছেন পুলিশের। কিন্তু এই যুবকের কাজ মারাত্মক ছিল বলেই গ্রেফতার করতে হয়েছে।