নগরোন্নয়ন খাতে আটকে রাখা হয়েছে ২,১৬৭ কোটি টাকা, আবার বাংলাকে বঞ্চনার অভিযোগ

একুশের বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকে বাংলাকে বঞ্চনা করা শুরু হয় বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের। একদিকে গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নের টাকা আটকে রেখেছে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার। অপরদিকে বাংলার নগরোন্নয়ন খাতে ২,১৬৭ কোটি টাকাও আটকে রেখে দেওয়া হয়েছে। আর এভাবেই বাংলাকে বঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। এমনকী আগামী দিনেও যাতে টাকা আটকে রাখা যায়, তার জন্য নানান ফন্দিফিকির করা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। কদিন আগে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারকে। সেই চিঠির সূত্রে খবর, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের গত অর্থবর্ষের টাকা আটকে আছে। আর চলতি অর্থবর্ষের এই খাতের প্রথম পর্যায়ের টাকাও আটকে রাখা হয়েছে।

এদিকে ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা, স্বাস্থ্য মিশনের টাকা–সহ একাধিক প্রকল্পে বকেয়া অর্থ দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার বলে অভিযোগ। এবার পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকার ক্ষেত্রেও একই পরিণতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের এই স্বৈরাচারী মনোভাব দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী। কেন্দ্র এই রাজ্য থেকে টাকা তুলে নিয়ে চলে যায়। অথচ সমস্ত হিসাব দেওয়া হলেও বিরোধী রাজ্যগুলির, বিশেষ করে বাংলার টাকা অকারণে আটকে রাখা হয়। আর তা আটকে রাখতে নিত্যনতুন ফন্দি আঁটা হচ্ছে।’

আরও পড়ুন:‌ আজ জরুরি ভিত্তিতে নয়াদিল্লি যাচ্ছেন রাজ্যপাল, শাহের সঙ্গে আরজি কর নিয়ে বৈঠক?

নবান্ন সূত্রে খবর, সম্প্রতি ২০২৩–২৪ অর্থবর্ষের পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা চেয়ে গত ৫ ও ১০ জুলাই কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দেয় পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। এই অর্থবর্ষের মোট ১৪৪৫ কোটি টাকা বকেয়া আছে। যা দ্রুত ছাড়ার কথা বলা হয়েছে ওই চিঠিতে। দু’টি চিঠিতেই আগের বছরগুলিতে পুরসভার মাধ্যমে এই খাতে টাকার খরচের সমস্ত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু টাকা মেলেনি। বরং পাল্টা চিঠি দিয়ে নতুন করে খরচ সংক্রান্ত একাধিক প্রশ্নের জবাব চাওয়া হয়েছে। সুতরাং বকেয়া টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে নতুন করে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

অন্যদিকে এবারের বাদল অধিবেশনে বাংলাকে বঞ্চনার কথা তুলে ধরেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করার কথা বলেন। কিন্তু তা দেখাতে পারেনি। রাজ্যের হিসেব অনুযায়ী, গত অর্থবর্ষের বকেয়া সহ চলতি অর্থবর্ষের প্রথম পর্যায়ের বকেয়া যোগ করলে রাজ্যের প্রাপ্য দাঁড়ায় মোট ২১৬৭ কোটি টাকা। তার ফলে রাজ্যের পুর এলাকাগুলিতে যে উন্নয়ন হওয়ার কথা তা ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ। গ্রামীণ এলাকার জন্য পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের চলতি অর্থবর্ষের প্রথম পর্যায়ের প্রায় ১৬০০ কোটি টাকা চেয়ে কেন্দ্রের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে পঞ্চায়েত দফতর।