‘সময়ের ডাক, সেনাপতি পথ দেখাক’, আরজি কর কাণ্ডে অভিষেককে চাইছেন নেতারা

আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে রাজ্যজুড়ে পথে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এখন এই নারকীয় ঘটনার বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেস শহর থেকে জেলায় সর্বত্র অপরাধীর শাস্তির দাবিতে লাগাতার আন্দোলন করে যাবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর তা এখন দেখাও যাচ্ছে ব্লকে ব্লকে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংসদীয় এলাকা ডায়মন্ডহারবারের কোথাও এই কর্মসূচি দেখা যায়নি। এই ব্যতিক্রমী থাকা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। তবে অভিষেক ঘনিষ্ঠ বিধায়ক–সাংসদরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করছেন।

এই ঘটনার পর গর্জে উঠেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি ‘‌এনকাউন্টার’‌ করার নিদান দিয়েছিলেন তিনি। তারপর যখন আরজি কর হাসপাতাল ভাঙচুর হয় তখন এক্স হ্যান্ডেলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। আর কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে ফোন করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন। তারপর থেকে সব চুপচাপ। এবার দলের অন্দরে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় আওয়াজ উঠেছে, ‘সময়ের ডাক, সেনাপতি পথ দেখাক।’ দক্ষিণ ২৪ পরগনার গঙ্গাসাগর, নামখানা, রায়দিঘি, মথুরাপুর পাথরপ্রতিমা, কুলপি এবং জেলার অন্যান্য প্রান্তে বিক্ষোভ–ধরনা দিতে দেখা যায় তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা–কর্মীদের। কিন্তু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এলাকার নেতৃত্ব এমন কিছু করেনি।

আরও পড়ুন:‌ মুছে গেল শেখ শাহজাহানের নাম, সন্দেশখালির দুটি ব্লকেই নিয়োগ হল ব্লক সভাপতি

এই পরিস্থিতিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চুপচাপই দেখা যাচ্ছে। কিন্তু কেন?‌ কারণ এই ঘটনায় প্রচণ্ড রেগে গিয়েছেন অভিষেক। তাঁর নিজেরও কন্যাসন্তান আছে। তাই এই নারকীয় ঘটনা তিনি মেনে নিতে পারছেন না। রেগে গিয়েই মুখ থেকে এনকাউন্টার করার কথা বলেছিলেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ। তাই দলের সঙ্গে রাস্তায় নামছেন না বলে সূত্রের খবর। অভিষেক–ঘনিষ্ঠ কুণাল ঘোষের কথাতেও উঠে এসেছে দলের সেনাপতিকে নামানোর বার্তা। অভিষেক–ঘনিষ্ঠ ডায়মন্ডহারবারের এক তৃণমূল কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘স্বাস্থ্য দফতর এবং পুলিশ প্রশাসনের সমন্বয় না থাকার ফলে একের পর এক ভুল পদক্ষেপ হয়েছে। তাতেই বিতর্ক বেড়েছে। তাই ক্ষোভ প্রকাশ করে দূরে সরে রয়েছেন অভিষেক।’

যদিও পাঁচদিন হয়ে গেলেও সিবিআই তদন্ত এখন প্রশ্নের মুখে। কারণ কোনও গ্রেফতার হয়নি। বড় কোনও তথ্যপ্রমাণও সামনে নিয়ে আসতে পারেনি তদন্তকারীরা। ডায়মন্ড হারবারের স্থানীয় নেতা–কর্মীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করেই চলেছেন। মথুরাপুরের সাংসদ বাপি হালদারের প্রোফাইলেও রয়েছে ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট। মগরাহাট পশ্চিম কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেসের যুবনেতা ইমরান হাসানের বক্তব্য, ‘আমাদের নেত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর নেতার নাম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গত পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে লোকসভা নির্বাচনেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে লড়াই করেছি। সিপিএম–বিজেপি নোংরামি করছে এই ইস্যুতে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মাঠে নামলে বিরোধীদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।’‌