বন্ধ ইলিশ আমদানি, ওপার বাংলার সমস্যার জের এপার বাংলার খাবারের পাতে

বিগত বেশ কয়েকদিনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা টালমাটাল হয়েছে। গদিচ্যুত হয়েছেন শেখ হাসিনা। ব্যাপক ছাত্র বিক্ষোভের মুখে পড়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে হয়েছে তাঁকে। আপাতত তিনি রয়েছেন ভারতবর্ষে।

শেখ হাসিনার নির্বাসনের পর বাংলাদেশে মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তবে এই সব কিছুর মধ্যেই সব থেকে বেশি প্রভাব পড়েছে ভারত বাংলাদেশের বাণিজ্যিক প্রসারে।

বর্ষা কাল মানেই ইলিশ মাছ। তবে পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষে যে ইলিশ মাছের রমরমা চলে, তার বেশিরভাগ আসে বাংলাদেশ থেকে। কিন্তু ওপার বাংলার অশান্তির জের এসে পৌঁছেছে এপার বাংলার মাছের বাজারে। রীতিমতো পদ্মা নদীর ইলিশের অভাব অনুভব করছেন এপার বাংলার মানুষ।

(আরও পড়ুন: হাতি দিবস পালন করার উদ্দেশ্য কী? রইল আকর্ষণীয় কিছু তথ্য)

ইলিশ, এটি মোহনা মাছ, বর্ষাকালে যার চাহিদা সবথেকে বেশি বেড়ে যায়। যদিও এই মাছটি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে পাওয়া যায় কিন্তু বাংলাদেশের ইলিশের স্বাদ একেবারেই অন্যরকম। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বিখ্যাত ইলিশ কূটনীতির অংশ হিসেবে আগস্ট মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ভারতে বার্ষিক ইলিশ রপ্তানি সুবিধা দিয়েছিলেন, যা এখন অতীত।

২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশের তরফ থেকে অন্যান্য দেশে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ থাকলেও শুধুমাত্র ভারতে মাছ বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়। এই মাছ আদান-প্রদানের ফলে ভারত বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কেরও উন্নতি ঘটে। তবে বর্তমানে বাংলাদেশের এই সমস্যার কারণে পশ্চিমবঙ্গ তো বটেই, ত্রিপুরাতেও ইলিশের আকাল দেখা গেছে।

এই প্রসঙ্গে কলকাতার মাছ ব্যবসায়ী শংকর পাল বলেন, ‘বাংলাদেশের তরফ থেকে ইলিশ মাছ এখন আমদানি হচ্ছে না। তাই স্বাভাবিকভাবেই ইলিশ মাছের দাম অত্যাধিক বেড়ে গেছে। এই মুহূর্তে ১ কেজি ইলিশ ১ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, তাও অবৈধভাবে আসছে যেগুলি। আর কিছুদিন পর এই মাছগুলিও পাওয়া যাবে না।’

(আরও পড়ুন: বিশ্ব হাতি দিবসে টুইট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির, কী লিখলেন তিনি)

আগরতলার মাছ বিক্রেতা তাপস সরকার বলেন, ‘সরবরাহ কমে গেছে তাই আমাদের দাম বাড়াতে হচ্ছে। আজ প্রতি কেজি ১৬০০ টাকায় ইলিশ কিনেছি, যা আগে ১৫০০ টাকা বা ১৪০০ টাকা ছিল। তবে শুধু ইলিশ না, অন্যান্য মাছের দামও বেড়েছে ভীষণভাবে।’

ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনের মহাপরিচালক অজয় সাহা গত সপ্তাহে বলেছিলেন, ‘আমাদের অনুমান অনুযায়ী, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের কারণে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেখানে প্রতিদিন বাংলাদেশের প্রায় ৩০ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি করা হয়, এখানে এখন কোনও কিছুই হচ্ছে না।’