সড়ক পরিবহনে শৃঙ্খলা আনতে জাতীয় সংলাপ করবে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন

সড়ক পরিবহনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতা, সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, সড়ক এবং পরিবহন বিশেষজ্ঞ, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ সব অংশীজনের সমন্বয়ে একটি জাতীয় সংলাপের আয়োজন করবে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জাতীয় সংলাপের সময় ও রূপরেখা প্রকাশ করা হবে।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানের পাঠানো যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, স্বাধীন বাংলাদেশে আজ পর্যন্ত সড়ক, রেল ও নৌ-পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। গড়ে ওঠেনি নিরাপদ-জনবান্ধব গণপরিবহন ব্যবস্থা। রাজনীতিকীকরণের মাধ্যমে গণপরিবহন খাতকে চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির আখড়া বানিয়ে রেখেছে একটি স্বার্থবাদী গোষ্ঠী।

অদক্ষ চালক, ত্রুটিপূর্ণ মোটরযান, অপেশাদারী ব্যবস্থাপনার কারণে অহরহ সড়ক দুর্ঘটনায় অগণিত মানুষ হতাহত হচ্ছে। বিপন্ন হচ্ছে তাদের পরিবার। পঙ্গু হয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করছেন অসংখ্য মানুষ। সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ ছয় বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি। শুধু কমিটি গঠন এবং সুপারিশমালা তৈরির মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ। আইনের বিধি-বিধান সংশোধনের নামে বছরের পর বছর সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে। এটা রাষ্ট্রীয় অপকৌশল।

রাজধানীর গণপরিহনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য কোম্পানিভিত্তিক বাস চালুর উদ্যোগ সফল হয়নি এই স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর কারণে। রেল ও নৌ-পরিবহন খুবই টেকসই গণপরিবহন ব্যবস্থা। অথচ কয়েক লাখ কোটি টাকা বরাদ্দ সত্ত্বেও দুর্নীতির কারণে এই দুটি খাত লোকসানে ডুবছে। তাই রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সংস্কারের সঙ্গে পরিবহন খাত সংস্কার করা অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নেতারা বলেন, ‘পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো যেসব দাবিতে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাস্তবায়নে আপত্তি জানাচ্ছে, সেসব দাবির যৌক্তিক সমাধানের লক্ষ্যে সব অংশীজনের সমন্বয়ে আমরা একটি জাতীয় সংলাপের আয়োজন করতে চাই। আমরা মনে করি, এই সংলাপের মাধ্যমে সব পক্ষের সম্মতিতে একটি টেকসই পরিবহন কৌশল বাস্তবায়ন করে সড়ক পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে। এ উদ্যোগ দেশের স্বার্থেই প্রয়োজন। কারণ সাশ্রয়ী ও জনবান্ধব যোগাযোগ ব্যবস্থা জাতীয় অগ্রগতির অন্যতম শর্ত।

বিবৃতি দিয়েছেন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, সৈয়দ জাহাঙ্গীর (গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ), মোহাম্মদ শাজাহান সিদ্দিকী (লিগ্যাল ইকোনোমিস্ট), ফেরদৌস খান (সড়ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ), অধ্যাপক হাসিনা বেগম ও নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান।