নবান্ন অভিযানে জখম পুলিশ সার্জেন্টকে হায়দরাবাদে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, চোখের আলো ফেরাতে

নবান্ন অভিযানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে পথে নেমেছিলেন তিনি। কিন্তু গাড়িতে উড়ে আসে ইট। তার আঘাতে বাঁ–চোখ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারপর থেকে ওই বাঁ–চোখে আর তেমন দেখতে পাচ্ছেন না তিনি। হ্যাঁ, তিনি কলকাতা পুলিশের সার্জেন্ট দেবাশিস চক্রবর্তী। এবার তাঁর চোখের উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ তাঁকে নিয়ে যাওয়া হল হায়দরাবাদে। রবিবার সকালে হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেনে করে হায়দরাবাদের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন দেবাশিস। সঙ্গে আছেন তাঁর স্ত্রী এবং পরিবারের সদস্যরা। এই পুলিশ সার্জেন্টের চোখের চিকিৎসার জন্য উদ্যোগী হয়েছেন খোদ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল ছাত্রসমাজ। আর সেদিনই হামলা হয় পুলিশের উপর। যার জেরে রক্তাক্ত হয় কলকাতা পুলিশ। আর চোখ হারাতে বসেছেন সার্জেন্ট দেবাশিস চক্রবর্তী। এই আবহে আজ ফলকনামা এক্সপ্রেসে হায়দরাবাদ রওনা হয়েছেন দেবাশিস। দক্ষিণের রাজ্যের এক বেসরকারি চোখের হাসপাতালে পুলিশ সার্জেন্টের চিকিৎসা হবে। চোখে আঘাত পাওয়ার পর দেবাশিসবাবু ভর্তি ছিলেন মুকুন্দপুরের হাসপাতালে। সেখান থেকেই আজ, রবিবার ভোর ৬টা নাগাদ তাঁকে বের করা কলকাতা পুলিশের অ্যাম্বুল্যান্সেই হাওড়া স্টেশনে পৌঁছে দেওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, দেবাশিস চক্রবর্তীর বাঁ–চোখ এখনও আংশিক দৃষ্টিহীন। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে চোখের আলো ফেরাতে হায়দরাবাদে পাঠানো হল দেবাশিসকে।

আরও পড়ুন:‌ ভারত–চিন যুদ্ধের সময়কার বোমা উদ্ধার অসমে, নিরাপদে ফাটিয়ে ফেলা হয়েছে সেনার নেতৃত্বে

এই চিকিৎসার পরই বোঝা যাবে দেবাশিস চক্রবর্তী চোখে দেখতে পাবেন কিনা। গত ২৭ অগস্ট ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ সংগঠনের ডাকে নবান্ন অভিযান হয়। তখন কর্তব্যরত পুলিশ সার্জেন্ট দেবাশিস স্ট্র্যান্ড রোডে ডিউটি করছিলেন। তখন পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে আন্দোলনকারীরা। সেই গাড়িতেই তখন ছিলেন দেবাশিস। তাঁর চোখে ইট লাগে। রক্ত ঝরতে থাকে চোখ দিয়ে। এই ঘটনায় ময়দান থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। তিনজনকে গ্রেফতার করেছে লালবাজার।

এরপর দেবাশিস চক্রবর্তীর চোখ নিয়ে শুরু হয় চিকিৎসা। প্রাথমিক চিকিৎসার পর অবস্থা অনেকটা স্থিতিশীল হয়। কিন্তু চোখে সব আবছা দেখছেন পুলিশ সার্জেন্ট। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য হায়দরাবাদে নিয়ে যাওয়া হল তাঁকে। নবান্ন অভিযানে কলকাতা পুলিশের বেশ কয়েকজন সার্জেন্ট আহত হন। অনেককেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। দেবাশিসের অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। দৃষ্টি হারানো নিয়ে আশঙ্কা দেখা দেয়। দেবাশিস চক্রবর্তী কলকাতা পুলিশের পূর্ব বিভাগের সাইবার সেলের ইনচার্জ হিসাবে কর্মরত। তাঁর স্ত্রীও পুলিশ বিভাগে কর্মরত।