Food problem of Namibia: খাবার নেই, হাতি, জলহস্তী মেরে জনগণের মধ্যে মাংস বিলি করবে নামিবিয়া

সারাদেশে একফোঁটাও বৃষ্টি নেই। এই মুহূর্তে ভয়াবহ খরার মুখে দাঁড়িয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নামিবিয়া। বৃষ্টির অভাবে দেশে চাষবাস প্রায় নেই। শস্য ভান্ডারও শেষের মুখে। মানুষ তো বটেই, অন্যান্য প্রাণীদেরও খাবার যোগাতেও অক্ষম নামিবিয়া সরকার। দেশের মানুষের মুখে খাবার জোগাতে তাই অবশেষে বড় সিদ্ধান্ত নিল আফ্রিকার এই দেশ।

ভয়াবহ খরার মুখে পড়ে দুবেলা দুমুঠো খাবারও জোগাতে পারছে না আফ্রিকার নামিবিয়া নামক দেশের মানুষরা। দেশটির ১.৪ মিলিয়ন জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক খাদ্য সংকটের কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন আর তাই গোটা বিষয়টি মাথায় রেখে দেশের জীবজন্তুদের মেরে দেশবাসীর মুখে খাবার তোলার সিদ্ধান্ত নিল নামিবিয়া সরকার।

সম্প্রতি নামিবিয়ার পরিবেশ, বন এবং পর্যটক মন্ত্রক ঘোষণা করেছে, দেশের মানুষদের খাদ্য সংকট থেকে উদ্ধার করার জন্য ৭৩০টি প্রাণীর মাংস বিতরণ করবে তারা। যে বড় বড় জীবজন্তু গুলিকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেই তালিকায় রয়েছে হাতি, জলহস্তী, মহিষ, জেব্রা এবং ইমপালা।

(আরও পড়ুন: বৃষ্টির দিনে কফি খেতে ইচ্ছে করছে? বাড়িতেই বানান দুর্দান্ত এই ৩ কোল্ড কফি রেসিপি)

ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, মন্ত্রকের তরফে ৩০টি জলহস্তী, ৬০টি মহিষ, ৫০টি ইমপালা, ১০০টি ইল্যান্ড, (এই দুটি হরিণ জাতীয় প্রাণী) ১০০টি নীল ওয়াইল্ডারবিস্ট, ৮৩টি হাতি মারার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই বন্যপ্রাণীতে সংগ্রহ করা হয়েছে জাতীয় উদ্যান এবং আশেপাশের এলাকা থেকে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এখনও পর্যন্ত মাঙ্গেত্তিতে বিভিন্ন প্রজাতির ১৫৭টি প্রাণী শিকার করা হয়েছে। পেশাদার শিকারিদের এই বন্যপ্রাণী শিকার করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। হত্যা করা প্রাণী থেকে মোট ৫৬, ৮৭৫ কিলোগ্রাম মাংস পৌছে দেওয়া হয়েছে ক্ষুধার্ত দেশবাসীদের মধ্যে। বাকি প্রাণীগুলিকেও শীঘ্রই শিকার করে তাদের মাংস দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে নামিবিয়ার পরিবেশ মন্ত্রক।

এত ভয়ঙ্কর আকার কেন হল? 

 

নামিবিয়ার এই দুর্দশার মূল কারণ হলো ‘এল নিনো’। প্রাকৃতিক নিয়ম অনুযায়ী, দক্ষিণ আমেরিকার উপকূল থেকে উষ্ণ সমুদ্রের জল পশ্চিম দিকে সরে গিয়ে এশিয়া-অস্ট্রেলিয়া উপকূলের কাছে কেন্দ্রীভূত হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এল নিনোর ফলে প্রশান্ত মহাসাগরের যে অংশ ঠান্ডা থাকার কথা, তা ক্রমাগত উষ্ণ হতে শুরু করে। সমুদ্রের অতিরিক্ত তাপ সমুদ্রপৃষ্ঠের বাতাসে নির্গত হতে শুরু করে।

(আরও পড়ুন: ১০২ বছরে বৃদ্ধা গড়লেন রেকর্ড, স্কাইডাইভ করে পালন করলেন নিজের জন্মদিন)

এই এল নিনো – র প্রভাব পড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার নামিবিয়ার প্রায় ৬ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষের ওপর। বৃষ্টির অভাবে প্রায় গোটা দেশের মাটি শুকিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে ক্ষেতের ফসল। শুধু ফসল নয়, এল নিনোর প্রভাব পড়েছে গবাদি পশুর উৎপাদনেও, যার ফলে খাদ্যের চরম ঘাটতি তৈরি হয়েছে সারা দেশ জুড়ে। ভেঙে পড়েছে অর্থনীতি।

প্রসঙ্গত, এল নিনোর প্রভাব শুধুমাত্র নামিবিয়া নয়, এর প্রভাব পড়েছে জিম্বাবোয়ে, জাম্বিয়া এবং মালাউই সহ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০১৮ থেকে ২০২১ পর্যন্ত নামিবিয়া একাধিক বার খরার কবলে পড়েছে কিন্তু এর আগে আফ্রিকার এই দেশে এত ভয়াবহ খরা দেখতে পাওয়া যায়নি।