Shimla Mosque: শিমলায় মসজিদের অবৈধ অংশ নিজেরাই ভাঙতে চান মুসলিমরা, বুলডোজার চালান, অনড় হিন্দুরা

শিমলার মসজিদ বিতর্কে এবার নয়া মোড়। মুসলিম পক্ষ মসজিদের অনুমোদনহীন অংশ ভেঙে ফেলতে রাজি। তারা নিজেরাই সেই অংশ ভেঙে ফেলতে চান। অন্যদিকে হিন্দুপক্ষের তরফে দাবি করা হয়েছে বুলডোজার নিয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। 

শিমলার সানজাউলি মসজিদ নিয়ে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে একটি মুসলিম কল্যাণ কমিটি আদালতের নির্দেশে মসজিদের অননুমোদিত অংশ সিল করার জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এবং স্বেচ্ছায় এটি ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে।

মসজিদের ইমাম এবং ওয়াকফ বোর্ড ও ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্যদের নিয়ে গঠিত কমিটি বৃহস্পতিবার পৌর কমিশনার ভূপেন্দ্র আত্রির কাছে একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছে।

কমিটির সদস্য মুফতি মহম্মদ শফি কাসমি বলেন, ‘আমরা শিমলা মিউনিসিপ্যাল কমিশনারের কাছে সঞ্জৌলিতে অবস্থিত মসজিদের অননুমোদিত অংশ ভেঙে ফেলার অনুমতি চেয়েছি।

প্রতিনিধি দলটি জোর দিয়ে বলেছে যে এই অঞ্চলের মুসলিম সম্প্রদায় হিমাচল প্রদেশের স্থায়ী বাসিন্দা এবং তাদের এই পদক্ষেপটি শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষার উদ্দেশ্যে।

সানজাউলি মসজিদের ইমাম আরও বলেন, আমাদের উপর কোনও চাপ নেই, আমরা কয়েক দশক ধরে এখানে বাস করছি এবং হিমাচলী হিসাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা শান্তিতে থাকতে চাই এবং ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখতে হবে।

এদিকে হিমাচল প্রদেশের রাজধানী সিমলার শহরতলি সানজাউলির বিতর্কিত মসজিদ নিয়ে হট্টগোল থামার নাম নেই। সানজাউলিতে বুধবারের তীব্র বিক্ষোভের পর বৃহস্পতিবার সিমলার রাস্তায় নেমে পড়েন শহরের ব্যবসায়ীরা। মসজিদে অবৈধ নির্মাণের প্রতিবাদে আন্দোলনরত মানুষের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা একটি শোভাযাত্রা বের করেন এবং রাস্তায় হনুমান চালিশা পাঠ করে।

সানজাউলিতে হিন্দু সমাজের উগ্র আন্দোলনে অনেক ব্যবসায়ীও শামিল ছিলেন। লাঠিচার্জে কয়েকজন ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন। ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা দোকানপাটে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। সিমলা ব্যাপার মণ্ডলের আহ্বানে ব্যবসায়ীরা শের-ই-পাঞ্জাব থেকে লোয়ার বাজার হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন। এসপি সিমলাকে বরখাস্ত করার দাবিতে স্লোগান দেন বিক্ষোভকারী ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতিবাদী হিন্দুদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করা মোটেও ঠিক নয়।

সিমলা ব্যাপার মণ্ডলের আহ্বানে শহরের সমস্ত প্রধান বাজার অর্ধদিবসের জন্য বন্ধ ছিল। সিমলার বিখ্যাত মল রোড, লোয়ার বাজার, রামবাজার, কুসুমপতি, পান্থঘাটি ও লক্কর বাজারের দোকানপাট সকাল থেকেই বন্ধ।

বিতর্কিত মসজিদের কারণে লাইমলাইটে আসা সানজাউলির পুরো বাজারও বন্ধ। লাঠিচার্জের প্রতিবাদে শহরতলির ব্যবসায়িক চেম্বারগুলিও দোকানপাট বন্ধ রেখেছে। ঢালি, টুটু ও বালুগঞ্জ শহরতলির দোকানপাটও তালাবদ্ধ ছিল।

শিমলা ব্যাপার মণ্ডলের সভাপতি সঞ্জীব ঠাকুর জানিয়েছেন, সঞ্জৌলিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর লাঠিচার্জের ঘটনার প্রতিবাদে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। “এই শাটডাউন মাত্র তিন ঘন্টার জন্য এবং এর মাধ্যমে আমরা প্রশাসনে আমাদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরতে চাই। স্থানীয় ব্যবসায়ী তথা সিমলা শহুরে বিজেপি প্রার্থী সঞ্জয় সুদও লাঠিচার্জে আহত হয়েছেন। তাদের মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তিনি বলেন, সঞ্জয় সুদ-সহ অন্য নেতাদের উপর লাঠিচার্জ করা অন্যায়। তিনি আরও বলেন, বাইরের রাজ্য থেকে আসা এই ধরনের মানুষ, যারা নিজেদের পরিচয় না জানিয়ে এখানে ব্যবসা করছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, এটা করা না হলে আন্দোলন আরও তীব্র করা হবে।

সঞ্জৌলিতে বিক্ষোভের জেরে তিনটি এফআইআর দায়ের করল সিমলা পুলিশ । বুধবার শহরতলির সানজাউলিতে বিক্ষোভকারীরা হট্টগোল সৃষ্টি করে। পুলিশের লাগানো ব্যারিকেড ভেঙে সানজৌলি বাজারে ঢোকেন বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভকারীরা ১৬৩ ধারা অমান্য করে বিতর্কিত মসজিদস্থলের ১০০ মিটার কাছে পৌঁছে যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা জড়ো হয়ে স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষও হয়। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও জলকামান ব্যবহার করে। বিক্ষোভের ঘটনায় শিমলা পুলিশ ধল্লি থানায় তিনটি পৃথক মামলা দায়ের করেছে। লাইভ হিন্দুস্তান ও মিন্ট সূত্রে খবর।