ফ্ল্যাট থেকে ভবন মালিকের মরদেহ উদ্ধার, হাসপাতালের পথে স্ত্রী-সন্তানের মৃত্যু

ঢাকার অদূরে সাভারের আশুলিয়ায় স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানসহ একই পরিবারের তিন জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে তাদের মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি।

প্রতিবেশীদের দাবি, দাম্পত্য কলহের জেরেই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ভাদাইল এলাকার এম এ হাসান বাচ্চুর নিজ মালিকানাধীন ভবনের চতুর্থ তলা থেকে একজনের মরদেহ এবং তিন জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুজনের মৃত্যু হয়।

নিহতরা হলেন ভবনমালিক এম এ হাসান বাচ্চু (৫০), তার স্ত্রী স্বপ্না বেগম (৩২) ও তাদের মেয়ে জান্নাতি(৫)। আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন বাচ্চুর ছেলে হিমেল (১৮)।

স্থানীয়রা জানান, নিহত বাচ্চু মিয়া এনজিও ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি এর আগেও বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু সেই স্ত্রী তাকে ফেলে চলে গেলে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দ্বিতীয় ঘরে তার ৫ বছর বয়সী কন্যাসন্তান ছিল। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হয়। আজ সকালে তাদের ঘরে আগুন জ্বলতে দেখে স্থানীয়রা দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় তারা বাচ্চু মিয়াকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান তারা। তার স্ত্রী ও সন্তান তখনও বেঁচে ছিল। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান। নিহত বাচ্চুর পা, মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গভীর ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে।

প্রতিবেশী ফরিদা বেগম বলেন, ‘সকাল ১০টার দিকে বাচ্চুর স্ত্রী তার মেয়েকে নিয়ে স্কুলে থেকে এসে দরজা লাগিয়ে দেন। এরপর দুপুরে তার ছেলে হিমেলের চিৎকারে ভবনের চারতলা থেকে দগ্ধ অবস্থায় স্বপ্না, জান্নাতি ও হিমেলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক স্বপ্না ও জান্নাতিকে মৃত ঘোষণা করেন। হিমেলকে রাখা হয় নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ)। তবে ভবনের মালিক বাচ্চুকে মৃত অবস্থায় ফ্ল্যাটের ভেতর পাওয়া যায়।’

তবে কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে, জানেন না ফরিদা বেগম। তিনি বলেন, ‘বাচ্চু ও তার স্ত্রীর মধ্যে কোনও ঝামেলা হয়েছিল মনে হচ্ছে। যে কারণে ফ্ল্যাটের ভেতরে তারা নিজেরাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। বাচ্চুর গালে ধারালো অস্ত্রের জখমও দেখেছি। তা ছাড়া তো আর কোনও কারণ দেখি না।’

বাচ্চুর ছোট বোন হেনা বেগম বলেন, ‘বর্তমান স্ত্রী ছিল বাচ্চুর তৃতীয় বিয়ের। আগের স্ত্রী অনেক আগে চলে গেছে। হিমেল হচ্ছে সেই প্রথম স্ত্রীর ছেলে। দ্বিতীয় স্ত্রী মীমাংসা করে আলাদা হয়ে গেছে। সে ঘরে একটি মেয়ে রয়েছে।’

আশুলিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও লাশ উদ্ধার করেছে।’ তবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা বিষয়টি তদন্ত করে বলতে হবে বলেও জানান তিনি।