Bengal Flood Situation: ‘দেখলে অরূপ, সততা একেই বলে’! হঠাৎ কেন একথা বললেন মমতা?

ভুলবশত মুখ্যমন্ত্রী তাঁর হাতে একটির বদলে দু’টি নতুন শাড়ি তুলে দিয়েছিলেন। সেটা বুঝেই সঙ্গে সঙ্গে একটি শাড়ি ফেরত দিয়ে দিলেন বন্যা কবলিত এলাকার এক বধূ। তাঁর এই সততা নজর কেড়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও।

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, অনন্য এই ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার, বাঁকুড়ার বড়জোড়ার মানাচর সংলগ্ন এলাকায়। বন্যায় দামোদরের জল বেড়েছে। প্রাণ বাঁচাতে তাই বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন দুর্গতরা।

তেমনই একটি ত্রাণ শিবিরে আশ্রিতা ওই গৃহবধূ যে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর মন জয় করে নিয়েছেন, তা বোঝা গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়াতেই। ওই বধূ তাঁর হাতে আসা অতিরিক্ত শাড়িটি ফিরিয়ে দিতেই পাশে দাঁড়ানো বাঁকুড়ার সাংসদ অরূপ চক্রবর্তীকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেখলে অরূপ, সততা একেই বলে।’

ওই বধূ অবশ্য তাঁর এই আচরণ অত্যন্ত স্বাভাবিক বলেই মনে করছেন। তাঁর বক্তব্য, বন্যায় অসংখ্য মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ত্রাণ যখন বিলি করা হচ্ছে, তখন দুর্গতদের সকলেরই তা সমানভাবে পাওয়া উচিত। একজন বেশি পেয়ে গেলে অন্য কেউ বঞ্চিত হবেন। সেই কারণেই হাতে আসা অতিরিক্ত শাড়ি তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে ফিরিয়ে দেন।

কিন্তু, এই ঘটনা সংবাদমাধ্যমে চাউর হতেই টিকা-টিপ্পনী করতে ছাড়ছেন না বিরোধী বিভিন্ন দলের রাজনীতিকরা। তাঁদের বক্তব্য, গত কয়েক বছর ধরে যা চলছে, তা থেকেই স্পষ্ট রাজ্যের শাসকদলে দুর্নীতিবাজদেরই এখন রমরমা।

এই অবস্থায় একজন সাধারণ বধূ তাঁর আচরণে বুঝিয়ে দিলেন, সততা শুধুমাত্র প্রচারের বিষয় নয়, তা কাজে করে দেখানোর বিষয়। মুখ্যমন্ত্রীর দলে এমন মানসিকতা সম্পন্ন লোকের অভাব রয়েছে বলেই তাঁকে ওই বধূর আচরণ উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরতে হয়েছে বলে কটাক্ষ করছে বিজেপি নেতৃত্ব।

পালটা তৃণমূলের জবাব, তাদের দলের দুর্নীতিগ্রস্তদের কোনও স্থান নেই। কারও বিরুদ্ধে এমন কোনও অভিযোগ উঠলেই সঙ্গে সঙ্গে দল পদক্ষেপ করে। অথচ, বিজেপি অন্যান্য দলের দুর্নীতিগ্রস্তদের নিজেদের দলে আশ্রয় দেয় এবং তাতেই তাঁদের সব দোষ ধুয়ে, মুছে সাফ হয়ে যায়। তাই সততা নিয়ে বিজেপির কোনও মন্তব্য করা মানায় না।

এদিকে, নিম্নচাপের জেরে মাঝেমধ্যেই রাজ্য়ের নানা প্রান্তে নাগাড়ে বৃষ্টি চলছে। সেইসঙ্গে, ডিভিসি-র ছাড়া জলে বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতিও যথেষ্ট উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে।

বন্যার্তদের খোঁজ নিতে মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং জেলায় জেলায় ঘুরছেন। বিভিন্ন জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করছেন তিনি। সঙ্গে চলছে ত্রাণ বিলিবণ্টনের কাজও। বন্যায় যাঁদের বাড়িঘরের ক্ষতি হয়েছে, তাঁরা যাতে আবাস যোজনার অধীনে শীঘ্রই বাড়ি পান, অথবা নিজেদের বাড়ি মেরামত করে নিতে পারেন, সেদিকে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।