বারুইপুরের কোচিং সেন্টারে খুনের হুমকি, নাবালিকা ছাত্রীকে ‘ধর্ষণ’!‌ গ্রেফতার শিক্ষক

রেলের কোয়ার্টারের কোচিং সেন্টারে পড়াশোনা করতে যেত নাবালিকা। এবার সেখানেই তাকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠল! আর এই ঘটনা কাউকে জানালে খুনের হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এই অভিযোগের উপর ভিত্তি করেই অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করল পুলিশ। নির্যাতিতা ছাত্রী ছাড়া আরও কয়েকজন ছাত্রীর উপর ওই শিক্ষক যৌন নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই আলোড়ন ছড়িয়ে পড়েছে বারুইপুরে। অভিযুক্ত গৃহশিক্ষককে গ্রেফতার করেছে বারুইপুর থানার পুলিশ। শুরু করা হয়েছে তদন্ত। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত গৃহশিক্ষকতার পাশাপাশি রেলে চাকরিও করেন।

এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, বারুইপুরে রেল কোয়ার্টারের কোচিং সেন্টারে পড়াশোনা করত ১৪ বছর বয়সের ওই নাবালিকা ছাত্রী। সম্প্রতি সেখানে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেয় বিশ্বনাথ সর্দার। আর ওই রেল কোয়ার্টারের কোচিংয়েই দিনের পর দিন নাবালিকার উপর যৌন নির্যাতন করত বলে অভিযোগ। কাউকে এই কথা জানালে খুন করে ফেলা হবে বলে হুমকি পর্যন্তও দেওয়া হয়। তারপর থেকেই এই ঘটনার জেরে মানসিক অবসাদে ভুগতে থাকে নাবালিকা। তখন পরিস্থিতি বেগতিক দেখে নির্যাতিতার বাবা–মা তাকে কাউন্সেলিংয়ের জন্য মনোবিদের কাছে নিয়ে যায়। সেখানেই প্রকাশ্যে আসে আসল ঘটনা। বারুইপুর রেল কোয়ার্টারে থেকে অবসর সময়ে গৃহশিক্ষকতা করতেন বিশ্বনাথ সর্দার। প্রথম–দশম শ্রেণিতে পড়া বহু পড়ুয়া তাঁর কাছে পড়ত। অষ্টম শ্রেণিতে পাঠরত নির্যাতিতাও অভিযুক্তের কোয়ার্টারে পড়তে যেত।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌বিদ্যুৎ দফতরের সমস্ত ছুটি বাতিল করা হয়েছে’‌, হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর এনে পদক্ষেপ অরূপের

অন্যদিকে পড়া বোঝানোর সময় প্রায়ই ওই নাবালিকার গায়ে হাত দিত ওই গৃহশিক্ষক বলে অভিযোগ। আর অন্য পড়ুয়ারা চলে গেলে কোয়ার্টারে তাকে বসিয়ে রেখে ধর্ষণ করা হতো বলেও অভিযোগ। আর ধর্ষণের কথা বাইরে বললে নাবালিকা–সহ তার বাবা–মাকেও মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ নির্যাতিতার। এভাবেই ওই নাবালিকা ছাত্রীকে ধর্ষণ করে অভিযুক্ত বিশ্বনাথ সর্দার বলে নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ। ভয়ে ওই ঘটনা কাউকে বলতে পারেনি নির্যাতিতা। বিষয়টা জানতে পেরেই থানার দ্বারস্থ হয় পরিবার। গ্রেফতার করা হয় ওই শিক্ষককে।

এছাড়া মেয়ে আতঙ্কে থাকে কেন?‌ এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে শুরু করে নির্যাতিতার পরিবার। তাই বুঝতে না পেরে নির্যাতিতার পরিবার ওই নাবালিকাকে মানসিক রোগ নিরাময়ের ক্লিনিকে নিয়ে যায়। সেখানে বেশ কয়েকটি কাউন্সেলিংয়ের পর ভয় কাটিয়ে মায়ের কাছে সব কথা জানিয়ে দেয় নির্যাতিতা। বিষয়টি জানার পরেই বারুইপুর থানায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন পরিবারের সদস্যরা। এই বিষয়ে বারুইপুরের এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস বলেন, ‘‌নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’‌