‘মিশন দাক্ষিণাত্যে’ ধারাবাহিক কংগ্রেস ভাঙিয়ে দল ভারী করছে বিজেপি। বিগত তিনদিনে দক্ষিণের তিন কংগ্রেস নেতাকে নিজেদের দলে নিল গেরুয়া শিবির। এর আগে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা একে অ্যান্টনির ছেলে অনিল অ্যান্টনি যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। গতকালই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন অবিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশের শেষ মুখ্যমন্ত্রী কিরণ কুমার রেড্ডি। আর আজ কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখালেন সি রাজাগোপালচারীর প্রপৌত্র সিআর কেশবন। উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর পশ্চিমবঙ্গের প্রথম রাজ্যপাল ছিলেন সি রাজাগোপালচারী। তাছাড়া দেশের শেষ গভর্নর জেনারেল ছিলেন তিনি। দেশের দ্বিতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে তামিলনাড়ুর দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন রাজাগোপালচারী। এহেন স্বাধীনতা সংগ্রামী তথা কংগ্রেসি রাজনীতিবিদের প্রপৌত্র বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় জোর ধাক্কা খেল বিজেপি। (আরও পড়ুন: দিল্লিতে ডিএ ধরনা নিয়ে অমিত শাহের মন্ত্রকের শর্ত, আজই রওনা দেবেন সরকারি কর্মীরা)
প্রসঙ্গত, ২০০১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন রাজাগোপালচারীর প্রপৌত্র সিআর কেশবন। গত ফেব্রুয়ারিতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গেকে চিঠি লিখে কংগ্রেসের প্রাথমিক সদস্যপদ ত্যাগ করার কথা বলেন কেশবন। পদত্যাগের আগে তামিলনাড়ু কংগ্রেস কমিটির দাতব্য ট্রাস্টের অন্যতম ট্রাস্টি ছিলেন কেশবন। খড়গেকে লেখা চিঠিতে কেশবন বলেন, ‘আমি সত্যিই দুঃখের সাথে বলতে চাই যে বিগত বেশ কিছু সময় ধরেই আমি সেই মূল্যবোধের কোনও নিদর্শন দেখতে পাইনি যার জন্য আমি কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলাম। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে নিষ্ঠার সাথে দলের জন্য কাজ করছি আমি। তবে আমি বর্তমানে বিবেকের সাথে আর এটা বলতে পারি না যে এই দলটির সঙ্গে আমি সহমত।’ এদিকে আজ চেন্নাইতে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেদিনই দিল্লিতে তামিলনাড়ুর কংগ্রেস নেতার বিজেপিতে যোগ কংগ্রেসের কাছে রাজনৈতিক ভাবে বড় ধাক্কা।
এর আগে গতপরশু কেরলের কংগ্রেস নেতা তথা একে অ্যান্টনির ছেলে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপি। গতকালই কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন কিরণ কুমার রেড্ডি। প্রসঙ্গত, আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গেই অন্ধ্র বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। জল্পনা, কিরণকে ‘মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী’ হিসাবে তুলে ধরে ভোটে যেতে পারে পদ্ম শিবির। প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী রাজশেখর রেড্ডির ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে পরিচিত কিরণ ২০০৯ সালে বিধানসভার স্পিকার নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় রাজশেখরের প্রয়াণের পরে তাঁর ছেলে জগন্মোহন রেড্ডির সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছিল কিরণের। ২০১০ সালে কিরণকে মুখ্যমন্ত্রী করা হলে জগন্মোহন দল ছেড়েছিলেন। এদিকে মনমোহন সরকারের অন্ধ্র ভাঙার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ২০১৪ সালে কংগ্রেস ছেড়েছিলেন কিরণ রেড্ডিও। ২০১৪ সালে জয় সমৈকান্ধ্র পার্টি গড়েছিলেন কিরণ। পরে অবশ্য ২০১৮ সালের জুলাই মাসে কংগ্রেসে ফিরে এসেছিলেন তিনি। তবে সেভাবে সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা যায়নি তাঁকে।