শোভনের মুখে ফিরহাদের সমালোচনা, কাননের দূরবীণে কি তবে মেয়রের চেয়ার?

ভোটের মুখে রাজ্যপাট ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। ভোট মিটতে মুখ ফিরিয়েছেন তিনি। তার পর বারবার চেষ্টা করেছেন মমতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে কোথাও আটকে গিয়েছে দিদির আদরের কাননের সেই দৌত্য। তবে কি আবার একবার সেই চেষ্টা শুরু করলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়? আর এবার কি প্রাথমিক লক্ষ্য কলকাতা পুরসভার মেয়রের পদ ফিরে পাওয়া। পার্কিং ফি নিয়ে ফিরহাদের সিদ্ধান্তের সমালোচনায় মুখ খুলে কি সেই অভিযানই শুরু করলেন তিনি।

এদিন শোভনবাবু বলেন, ‘ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও না। মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়কে না জানিয়ে কিছু করিনি। আমি ছিলাম ‘হার মাস্টার্স ভয়েজ’। তার মানে এই নয় যে আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে নেব। আমাকে তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাতে হবে যে কারণ কী, প্রয়োজনীয়তা কী? সেখানে যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছাড়পত্র না থাকে এটা কখনোই করা উচিত নয়। আমি তৃণমূল কংগ্রেস পরিচয় দেব। একটা প্রতিষ্ঠানের প্রধান হব আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমতি ছাড়া সিদ্ধান্ত নেব এটা কখনওই হতে পারে না। কনফিডেন্স থাকা ভালো। কিন্তু ওভার কনফিডেন্স থাকা কখনওই বাঞ্ছনীয় নয়’।

শুক্রবার বিকেলে এক সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূলের এক মুখপাত্র বলেন, ‘কলকাতায় পার্কিং ফি বৃদ্ধি মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতি বা অনুমোদন সাপেক্ষে হয়নি। তাঁরা জানতেন না এই ধরনের একটা চাপ মানুষের উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সিদ্ধান্ত যে স্তরেই নেওয়া হয়ে থাকুক, সরকার বা দল এই সিদ্ধান্ত অনুমদন করে না। মুখ্যমন্ত্রীর এটা স্পষ্ট সিদ্ধান্ত। তাই মুখ্যমন্ত্রী মেয়রকে জানিয়ে দিয়েছেন যে, কলকাতা পুরসভা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। এটা দলের সিদ্ধান্ত। সম্ভবত আজকের মধ্যেই পুরসভাকে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়ে হবে’। এর পর পুরসভার বিজ্ঞপ্তির পরোয়া না করেই তৃণমূলের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে বর্ধিত পার্কিং ফি প্রত্যাহারের জন্য পুরসভাকে ধন্যবাদ জানিয়ে দেওয়া হয়। গোটা ঘটনায় ফিরহাদ বলেন, বিষয়টা এভাবে সাংবাদিক বৈঠক করে না বললেই ভালো হত।

এরই মধ্যে শোভনের মন্তব্যে প্রশ্ন উঠছে, তবে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি বিশ্বস্ততা প্রমাণ করতে চাইছেন তিনি। মনে করাতে চাইছেন তিনি মেয়র থাকাকালীন দীর্ঘ সময়ে কখনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই ধরণের অস্বস্তিতে পড়তে হয়নি। শোভন চট্টোপাধ্যায় কলকাতার মেয়র পদ ছাড়ার পর থেকে সেই পদে রয়েছেন ফিরহাদ। সঙ্গে মন্ত্রিসভার দায়িত্বও সামলাচ্ছেন তিনি। তবে কি শোভনের দূরবীণে মেয়রের চেয়ার?