প্রশাসনিক সভার নামে রাজনৈতিক জনসভা করেন আপনি, আপনার কাছে গণতন্ত্র শিখতে হবে?

প্রশাসনিক সভার নামে আপনি রাজনৈতিক সভা করেন, গণতন্ত্র আপনার কাছ থেকে শিখতে হবে? অমিত শাহের পদত্যাগ দাবি করায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই ভাবেই আক্রমণ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার সন্ধ্যায় বাঁকুড়া ওন্দা থেকে মমতাকে উদ্দেশ করে আক্রমণ শানান তিনি। বলেন, সংবিধান আপনার কাছ থেকে শিখব না।

এদিন শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘দুপুরবেলা ভাইপোরে পিসি বড় বড় কথা বলেছে। অমিত শাহ জি না কি সংবিধান মানেনি। ৩৫টা সিট পেলে সরকার ফেলে দিবে বলেছে। আরে অমিত শাহ জিতো বিজেপির সভায় বলেছে। আর আপনি কোথায় বসে গালি দিচ্ছেন। নবান্নয় বসে, দু’পাশে জাতীয় পতাকা, মাথায় অশোক স্তম্ভ’।

শুভেন্দুর অভিযোগ, ‘আপনি সাইকেল দেওয়ার নাম করে বাচ্চা বাচ্চা ছেলেমেয়েদের ডেকে এনে, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মায়েদের জোর করে ডেকে এনে, সিভিক ভলান্টিয়ারদের বসিয়ে প্রশাসনিক সভার নামে জনসভা করেন। প্রধানমন্ত্রীকে বলেন কিম্ভূত কিমাকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেন হোঁদলকুৎকুৎ। আপনার কাছ থেকে শিখতে হবে গণতন্ত্র? পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র আপনি মুখ্যমন্ত্রী, সারা ভারতে এই উদাহরণ নেই। যিনি হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দকে অপমান করার জন্য ৫ লক্ষ টাকা ফাইন জমা করিয়েছেন বার কাউন্সিলে। আপনার কাছ থেকে সংবিধান শিখতে হবে’?

সোমবার বিকেলে নবান্নে এক ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পদত্যাগ দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘দলীয় সভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কী বলবেন সেটা তাঁর ব্যাপার। কিন্তু তিনি কখনওই বলতে পারেন না যে ৩৫টা আসন পাব। পেলেই আর অপেক্ষা করতে হবে না। বাংলায় সরকার পড়ে যাবে। তার মানে একটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী চক্রান্ত করছেন। এত ঔদ্ধত্য যে তিনি দেশ, গণতন্ত্র, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে রক্ষা করার পরিবর্তে তিনি বলছেন যে একটা নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারকে তিনি ভেঙে দেবেন। কোন আইনে তিনি বলতে পারেন? তার মানে কি নিজেরা আইন তৈরি করবে? ওরা বিচারব্যবস্থা বদলে ফেলবে, সংবিধান বদলে ফেলবে। ইতিহাস বদলে ফেলবে। এই কথা বলার কোনও অধিকার তাঁর নেই। আমরা পরিষ্কার বলতে চাই। এই কথা বলার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী হিসাবে তাঁর থাকার কোনও অধিকার নেই। আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছি। গণতান্ত্রিক ভাবে’।

গত ১৪ এপ্রিল সিউড়ির বেণীমাধব স্কুলের মাঠে বিজেপির এক সভায় অমিত শাহ বলেন, ‘২০২৪ সালে আমাদের ৩৫এর বেশি আসন দিন, ২০২৫ সালের অপেক্ষা করতে হবে না। তার আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ধসে যাবে। আর একবার বাংলায় পদ্ম ফোটালে বোমা বিস্ফোরণ হবে না, রাম নবমীর মিছিলে হামলা হবে না, অত্যাচার হবে না, অনুপ্রবেশ হবে না, গরুপাচার হবে না। বাংলায় যে ধরণের দুর্নীতি চলছে তা শেষ করার একমাত্র উপায় ভারতীয় জনতা পার্টি’।