নামেই ইংরেজি মাধ্যম স্কুল। অথচ, ইংরেজি পঠন-পাঠনের কোনও শিক্ষিকা নেই। ফলে বাংলা মাধ্যমেই পড়তে হচ্ছে ছাত্রীদের। এমনই অবস্থা মালদহের ঐতিহ্যবাহী বার্লো গার্লস হাইস্কুলে ইংরেজি মাধ্যমের। এই অবস্থায় মেয়েদের ওই স্কুলে ভর্তি করিয়ে মাথায় হাত অভিভাবকদের। এর প্রতিবাদে বুধবার মালদহের মিশন রোড় এলাকায় অবস্থিত বার্লো গার্লস হাইস্কুলে তুমুল বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকরা। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ইংরেজ বাজার থানার পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আরও পড়ুন: গরমের ছুটিতে পিছিয়ে গিয়েছে পড়ুয়ারা, সিলেবাস শেষ করতে বাড়ল স্কুলের পিরিয়ড
বার্লো গার্লস হাই স্কুল একটি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল। এই স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম রয়েছে। কিন্তু, ইংরেজির শিক্ষক না থাকায় সমস্যায় পড়েছে পড়ুয়ারা। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার দাবি, এর আগে তিনি বিষয়টি শিক্ষা দফতরকে জানিয়েছেন। জেলা স্কুল পরিদর্শক সেই সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু, তারপরে স্কুলে ইংরেজি শিক্ষক না থাকায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে ওই স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম চালু হয়। কিন্তু ৫ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও এখনও সেখানে ইংরেজি মাধ্যমের কোনও শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। ফলে ইংরেজি মাধ্যমে ভর্তি হওয়া সত্ত্বেও ছাত্রীদের বাংলা মাধ্যমেই পড়ানো হচ্ছে। মূলত সেই অভিযোগ তুলে বুধবার বিক্ষোভ করেন অভিভাবকরা। তাঁদের অভিযোগ, গত কয়েক মাস ধরে তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সমস্যার পরেও কোনও সমাধান হয়নি। ফলে পড়ুয়ারা বাংলা মাধ্যমেই ক্লাস করছে।
বিক্ষোভকারী এক অভিভাবক বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মালদা জেলায় দুটো ইংরেজি মাধ্যম স্কুল চালু করেছিলেন। তারমধ্যে আমাদের এই ঐতিহ্যবাহী গার্লস হাইস্কুলে ইংরেজি মাধ্যম চালু হয়েছে পাঁচ বছর আগে। কিন্তু এখনও কোনও শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি ইংরেজি মাধ্যমের জন্য। ইংরেজি মাধ্যমের পঠন পাঠনকে উঠিয়ে দেওয়ার জন্য চক্রান্ত করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। আমরা স্কুল কর্তৃপক্ষ, এসআই এবং ডিআইকে একাধিকবার জানিয়েছি। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা সমস্ত অভিবাবকরা স্কুলে এসে প্রধান শিক্ষিকাকে ঘেরাও করেছি। সরকার না পারলে আমাদের অনুমোদন দেওয়া হোক। আমরা টাকা দিয়ে স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষক নিয়োগ করব। অবিলম্বে ইংরেজি মাধ্যম চালু না করলে আমরা গণ আন্দোলন করব।’ তাছাড়া ইংরেজি মাধ্যমে পড়ুয়াদের ক্লাস থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে বলে তাঁর অভিযোগ।
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা দীপশ্রী মজুমদার বলেন, ‘আমি এ বিষয়টি জেলা পরিদর্শককে জানিয়েছি। তিনিও বেশ কয়েকবার শিক্ষা দফতরে চিঠি দিয়েছেন। এই সপ্তাহেও তিনি চিঠি দিয়েছেন। আমরা চাই যে দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হোক। আমরাও চাই আমাদের স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম খুব ভালোভাবে চলুক। ভলেন্টিয়ার শিক্ষক রাখা যাবে কিনা সেই বিষয়ে নিয়ম আমাদের জানা নেই। আমরা চাইছি এই মুহূর্তে কোনও একটা ব্যবস্থা করা হোক।’ মালদার স্কুল পরিদর্শক জানিয়েছেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।