ধর্ষণ বা পকসো আইনের অপব্যবহার সমাজের জন্য শুভলক্ষণ নয়: হাইকোর্ট

ধর্ষণ বা পকসো আইনের অপব্যবহার করা নিয়ে আগে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে একাধিক হাইকোর্ট। এবার ব্যক্তিগত সুবিধার্থে ধর্ষণ বা পকসোর মতো আইনকে অপব্যবহার করা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট। একটি ধর্ষণের মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাস এবং বিচারপতির পার্থসারথি সেন ডিভিশন বেঞ্চ মন্তব্য করেছে, ‘এই ধরনের আইনের অপব্যবহার সমাজের প্রতি শুভলক্ষণ নয়।’ 

আরও পড়ুন:কোন বদ মতলবে মাঝরাতে ধর্ষিতার বাড়ি গিয়েছিল পুলিশ? প্রশ্ন বিচারপতির

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, উলুবেরিয়ার একটি ধর্ষণের মামলা শুনানি প্রসঙ্গে এই মন্তব্য করেছে আদালত। মামলার বয়ান অনুযায়ী, এক গৃহবধূ তাঁর ভাশুর ও ননদের স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ জানিয়েছিলেন। ননদের বিরুদ্ধেও তিনি ধর্ষণের সাহায্য করার অভিযোগ তুলেছিলেন। সেই মামলায় ওই তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপরে জামিনের আর্জি জানিয়ে তারা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। সেই সংক্রান্ত মামলায় এই মন্তব্য করে আদালত। তাদের হয়ে মামলায় সওয়াল করেন আইনজীবী কল্লোল মণ্ডল। তিনি দাবি করেন, মিথ্যে ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছে। শ্বশুরের সম্পত্তি দখল করার জন্যই স্বামীর সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেছিলেন অভিযোগকারীনি। এমনকী গৃহবধূর অভিযোগে নানা অসঙ্গতির কথাও আদালতের সামনে তুলে ধরেন আইনজীবী। মহিলার অভিযোগ, সম্পত্তি নিয়ে তাঁদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিবাদ চলছিল। এর মধ্যে সম্পত্তি বিবাদ মেটানোর জন্য ওই মহিলাকে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে পাঠানো হয়। তখনই তাঁকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। আইনজীবীর প্রশ্ন, ওই মহিলা সম্পত্তির অংশীদার নন, তাঁর স্বামীর ভাগ আছে। তাহলে কেন তাকে আলোচনার জন্য ডেকে পাঠানো হল?

এরপরেই অভিযুক্তদের জামিনের আবেদন জানান আইনজীবী। তারপরে অবশ্য তাদের শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করে আদালত। একই সঙ্গে আইনের অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতে আইনজীবী জানান, বর্তমানে প্রতিশোধ নিতে লোকেরা ধর্ষণ এবং পকসোর মতো আইনের অপব্যবহার করছে। অথচ মহিলা ও শিশুদের সুরক্ষার জন্য এই আইন তৈরি হয়েছিল। এই ধরনের আইনের অপব্যবহার হলে সে ক্ষেত্রে প্রকৃত নির্যাতিতারা বঞ্চিত হবেন। তারা প্রশ্নের মুখে পড়তে পারেন। এরপরেই এই ঘটনায় তদন্তের দাবি জানান আইনজীবী  একই সঙ্গে তিনি আদালতে দাবি করেন, অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে সেক্ষেত্রে অভিযুক্তকে শাস্তি দিতে হবে।