পদত্যাগ করলেন আইডিয়ালের অধ্যক্ষ, দুর্নীতি তদন্তের দাবি

এক ছাত্রীর বাবার করা ধর্ষণের মামলায় সহযোগিতার অভিযোগে অভিযুক্ত রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদী পদত্যাগ করেছেন। শনিবার (৭ অক্টোবর) পরিচালনা কমিটির সভায় ফাওজিয়া রাশেদীর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে।

বিষয়টি বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করে গভর্নিং বডির সদস্য শাহাদাৎ ঢালী বলেন, শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণ দেখিয়ে অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদী পদত্যাগ করেছেন।

তিনি জানান, আগামী ৩০ অক্টোবর তার অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অল্প কিছুদিন আগেই তিনি পদত্যাগ করলেন। তার স্থলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পেয়েছেন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক মিজানুর রহমান।

দুর্নীতির তদন্ত দাবি অভিভাবক ফোরামের
রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদীর দুর্নীতির তদন্তের দাবি করেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অভিভাবক ফোরাম। রবিবার (৮ অক্টোবর) রাতে বিবৃতির মাধ্যমে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।

রবিবার আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ অভিভাবক ফোরামের চেয়ারম্যান ফাহিমউদ্দিন আহমদে ও সাধারণ সম্পাদক রোস্তম আলী এক বিবৃতিতে বিতর্কিত বর্তমান গভর্নিং বডির সবার পদত্যাগ দাবি করেছেন।

অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশিদীর আমলের সব কর্মকাণ্ড অবৈধ। তার ‘অবৈধ কর্মকাণ্ড, অবৈধ ভর্তি ও নিয়োগ–বাণিজ্য’ তদন্ত করে শাস্তির আওতায় না আনা পর্যন্ত অধ্যক্ষের যাবতীয় দেনা-পাওনা পরিশোধ না করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান অভিভাবক ফেরামের এই দুই নেতা।

বিবৃতিতে অভিভাবক ফোরাম বলেছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদ লোভ-লালসা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে নির্যাতন করেন অধ্যক্ষের সহযোগিতায়। ছাত্রীকে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন ছাত্রীর বাবা। মামলায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযুক্তকে সহায়তার অভিযোগ আনা হয়েছে। তাকে ২ নম্বর আসামি করায় এবং শিক্ষা প্রশাসন ও অভিভাবকদের চাপের মুখে গত ২১ সেপ্টেম্বর শারীরিক অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশিদী পদত্যাগপত্র দাখিল করতে বাধ্য হন।

অভিভাবক ফোরামের চেয়ারম্যান ফাহিমউদ্দিন আহমদে ও সাধারণ সম্পাদক রোস্তম আলী বিবৃতিতে ‘বিতর্কিত’ বর্তমান গভর্নিং বডির সবার পদত্যাগ দাবি করে বলেন, অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশিদী ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে লটারি ছাড়াই বিভিন্ন শ্রেণিতে দুই শতাধিক শিক্ষার্থীকে অবৈধভাবে ভর্তি করিয়ে কোটি কোটি টাকার ভর্তি-বাণিজ্য করেছেন এবং এনটিআরসিএর অনুমোদন ছাড়াই ২০২৩ সালে ৫৯ জন শিক্ষককে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়ে দুর্নীতি করেছেন। 

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ক্যাচমেন্ট এলাকার নামে মতিঝিল ক্যাম্পাসে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে শুধু ‘এজিবি কলোনির’ জন্য ৪০ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করে অবৈধভাবে অন্যদের বঞ্চিত করে শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়ে ভর্তি-বাণিজ্য করেছেন বলেও জানান তারা।