ক্যামডেন দুর্গোৎসব বাঙালিদের হাত ধরে মেতে উঠেছে, রিভার কার্নিভাল বিশেষ আকর্ষণ

টেমসের পাড়ে ক্যামেডেনের মাটিতে হচ্ছে দুর্গাপুজো। এখন এই দুর্গাপুজো ৫৯টি শরৎ পেরিয়ে ‘‌সুইস স্কটিস লাইব্রেরির’‌ অলিন্দে এই বছর ৬০তম দুর্গোৎসব চলছে সম্পূর্ণ সাবেকিয়ানায়। লন্ডনের দুর্গাপুজোর ইতিহাসে ‘‌ক্যামডেন দুর্গোৎসব’‌কে প্রাচীন নিদর্শন বললেও ভুল হবে না। ছোট–বড় মিলিয়ে এদেশে ৬৪টি দুর্গাপুজোর অধিকাংশই হল বাঙালি রীতি,পঞ্জিকা মেনে হচ্ছে। এখানে মায়ের বোধন, অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ, সিঁদুর খেলা সবই হয়। কর্মসূত্রে দেশ ছাড়লেও মনেপ্রানে সকলে খাঁটি বাঙালি।

এই বছর ক্যামেডেনের দুর্গোৎসবের বিশেষ আকর্ষণ হলো—‘‌দুগ্গা দুগ্গা’‌। দুর্গাপুজোর সামগ্রী দিয়ে সাজানো সমস্ত পুজো মণ্ডপ। দুর্গা কখনও কিশোরী, কখনও রমণী। এমনকী বিদায়বেলায় তাঁর নাম নিয়ে যাত্রা করলে আসন্ন বিপদ যায় কেটে মনে করে আজও অনেক বাঙালির ঘরে এমন পৌরাণিক বিশ্বাস রয়েছে। এগুলিই শিল্পের চিহ্নরূপে ছত্রে ছত্রে স্থান পেয়েছে মণ্ডপের আনাচে–কানাচে। শুধু তাই নয়, ক্যামডেন দুর্গাপুজো উদ্যোক্তারা তাদের থিম সংও তৈরি করেছে।

ক্যামেডেন দুর্গাপুজো বিশ্বের একাধিক জায়গায় আলোচিত হয়। এখানে প্রত্যেক দিনের সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। তার মধ্যে নৃত্য গীতি আলেখ্য, বর্ষা আসে বসন্ত, আর সপ্তকের সুরের শেষে ঘোষিত হবে শারদ সুন্দরীর সম্মান। সিরাজদৌল্লা নাটক মাতিয়ে রাখল এবারের সপ্তমীর সন্ধ্যাকে। সবশেষে মহিষাসুরমর্দিনীর সুরের ঝংকারে শেষ হয়। এখানে বেশিরভাগ বাঙালি এই দুর্গাপুজোতে মিলিত হন। আড্ডা দেওয়া, গল্প করা থেকে শুরু করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মেতে ওঠেন।

আরও পড়ুন:‌ বীরভূমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দুর্গাপুজো নজরকাড়া, কাজল শেখের উদ্যোগে জমজমাট

আজ, নবমী সেখানে ভোগ খাওয়ানো হচ্ছে। এই বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ড:‌ আনন্দ গুপ্ত জানান, এবারের ৬০তম বর্ষপূর্তির আয়োজনের বিশেষ আকর্ষণ হল ট্রাম্পেল পিয়ার থেকে জাহাজে করে প্রতিমা নিয়ে টেমসের উপরে রিভার কার্নিভাল সঙ্গে মায়ের বিদায় বেলায় বরণ করে সিঁদুর খেলা। সব মিলিয়ে একেবারে নির্ভেজাল দুর্গাপুজোর আনন্দে ভরপুর ক্যামেডেন প্রাঙ্গণ, রিভার কার্নিভাল বাঙালির মনে রেড রোডের আভাসটা খানিকটা হলেও মেটাবে। এতেই খুশি সকলে। লন্ডনে ক্যামেডেন দুর্গোৎসব হচ্ছে জমজমাট বাতাবরণে।