সরকারি পদে থেকে জঙ্গিদের মদত, ২ বছরে জম্মু-কাশ্মীরে বরখাস্ত ৫৫ অফিসার

সন্ত্রাসবাদীদের মদত দেওয়ার অভিযোগ গত দু’বছরে জম্মু-কাশ্মীরে ৫৫ জন সরকারি আধিকারিককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এমনই তথ্য জানালেন জম্মু-কাশ্মীরের উপ-রাজ্যপাল মনোজ সিনহা। তিনি জানান, ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট  কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিল করার পর থেকে সরকার কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদকে নির্মূল করতে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। তার ফলস্বরূপ এত সংখ্যক সরকারি অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: শীতের আগে কাশ্মীরে পাক জঙ্গি পাঠানোর ছক বানচাল, বড় সাফল্যের কথা জানালেন ডিজিপি

জম্মু ও কাশ্মীরের উপ-রাজ্যপাল মনোজ সিনহা রবিবার দিল্লিতে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানে জম্মু ও কাশ্মীরের সন্ত্রাসবাদের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার সময় তিনি একথা জানান। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি এবং সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান অব্যহত থাকবে। 

উপ-রাজ্যপাল জানান, চাকরি থেকে যাদের বরখাস্ত করা হয়েছে তাদের অনেকেই উচ্চপ্রদস্থ আধিকারিক। জানা গিয়েছে, ২০২১ সালে সন্ত্রাসবাদীদের সাহায্যকারী এই ধরনের সরকারি কর্মী আধিকারিকদের চিহ্নিত করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার একটি বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠন করেছিল। ওই সময়েই রাজ্যের রাজ্যপাল স্পষ্টভাবে বলেছিলেন, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে যারা সন্ত্রাসবাদীদের সাহায্য করে, তাদের সরকার কোনওভাবেই অর্থ দিতে পারে না।

সিনহা বলেন, এখন পর্যন্ত অনেক হাই-প্রোফাইল বা গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পদে থাকা ব্যক্তিদের বরখাস্ত করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, চলতি বছরের অগস্টে জম্মু ও কাশ্মীর ব্যাঙ্কের চিফ ম্যানেজারকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ম্যানেজারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে যোগসূত্র থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। এরপর গত জুলাই মাসে জম্মু ও কাশ্মীর সরকার দেশবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ আধিকারিক-সহ তিনজন সরকারি আধিকারিককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছিল। ৩১১ ধারার অধীনে সরকার এখনও পর্যন্ত যাদের বরখাস্ত করেছে তাদের মধ্যে রয়েছেন– একজন রসায়নের অধ্যাপক, জম্মু ও কাশ্মীর জেল বিভাগের একজন ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট প্রমুখ।

প্রশাসন সংবিধানের ৩১১–এর (২) ও (সি) অনুচ্ছেদের অধীনে ওই সরকারি আধিকারিকদের বরখাস্ত করছে। এর আওতায় তদন্ত ছাড়াই কর্মচারীদের বরখাস্ত করার অধিকার সরকারের রয়েছে। রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপাল যদি সন্তুষ্ট হন যে এটি রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রয়োজনীয় তাহলে তাঁরা সরকারি আধিকারিকদের এভাবে বরখাস্ত করতে পারেন।